—প্রতীকী ছবি।
বিজেপির তিন রাজ্যে জয়ের দিনই অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা জানাল, আগামী লোকসভা ভোটে এ রাজ্যের ৪২টি আসনেই প্রার্থী দেবে তারা।
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘‘অন্যায় ভাবে এনআরসি প্রয়োগের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে এই অন্যায়ের চিরতরে প্রতিকার করা হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি মতুয়া-সহ সমস্ত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ এবং জৈনদের ক্ষেত্রে যাঁরা জন্মসূত্রে ভারতীয়, তাঁরা বিশ্বের যেখানেই থাকুন, ভারতের নাগরিকত্ব নিতে চাইলে যাতে দিনক্ষণ না দেখে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়া হয়, তার দাবি তোলেন।
সংগঠন সূত্রের খবর, ২৯ অগস্ট পশ্চিমবঙ্গ দিবস উপলক্ষে নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁরা কিছু দাবি জানান। ২৯ নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাতেও দাবি জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। উল্টে দাবি, অপমান করে সরিয়ে দেওয়া হয়।
চন্দ্রচূড়ের দাবি, ‘‘আমরা কোনও মূল্যেই মতুয়াদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলকে ভোটের নোংরা রাজনীতি করতে দেব না।’’
এ দিন চন্দ্রচূড় মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করেন। মমতা তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে চন্দ্রচূড়ের দাবি।
বিষয়টিকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না বিজেপি। বরং তাদের দাবি, তৃণমূলের অঙ্গুহেলনেই কাজ করছে হিন্দু মহাসভা। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘হিন্দু মহাসভা এখন তৃণমূলের সুরে গাইছে। তবে সিএএ কার্যকর হবে। মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষেরা বিজেপির সঙ্গে আছেন। তাঁরা জানেন নাগরিকত্ব দিতে পারেন একমাত্র নরেন্দ্র মোদীই।’’
তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের দাবি, ‘‘মতুয়া উদ্বাস্তুরা বুঝতে পেরেছেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাঁদের ভাঁওতা দিয়েছে। তাই তাঁরা নিজেদের আত্মসম্মানের তাগিদে আন্দোলন করছেন।’’ মমতা ঠাকুরের কথায়, ‘‘নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে হিন্দু মহাসভার সঙ্গে আমরা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ এক সঙ্গে লড়াই করছি।’’
রুবি হাসপাতাল মোড়ে হিন্দু মহাসভার পুজো ঘিরে এর আগে বিতর্ক হয়েছিল বিস্তর। মহাত্মা গান্ধীর আদলে অসুর তৈরি হয়েছিল। গোলমাল বাধায় পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। এ বার এনআরসি প্রশ্নকে সামনে এনে রাবণের দশ মাথার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মুখের আদল ছিল। দশমীর দিনে সেই রাবণদহন নিয়েও শোরগোল বাধে।