—ফাইল চিত্র।
গত পাঁচ বছরে গোটা রাজ্যের সঙ্গে জেলাতেও বেড়েছে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা। তবে তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, ২০১৪-য় রাজ্যে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন মাত্র ৪৯৯ জন। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে সেই সংখ্যাটা ছিল ৭৫৭। এ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ১৪২৬। আগে তাঁরা ছিলেন ‘অন্যান্য’ হিসেবে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচন থেকে তাঁদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় ‘অন্যান্য’ ভোটারের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৯। গত বিধানসভা নির্বাচনে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ তালিকায় ভোটারের সংখ্যা হয় ৫৫ জন। সে বার সবথেকে বেশি ১০ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে। দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিম, কালনা, পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রে এক জন করে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন। রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, আউশগ্রাম, ভাতার, কাটোয়া, মন্তেশ্বর কেন্দ্রে কোনও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারই ছিলেন না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, এই দুই জেলার ২৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃতীয় লিঙ্গের মোট ভোটার রয়েছেন প্রায় ১৩৬ জন। গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। এ বারও সবথেকে বেশি ২০ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন আসানসোল উত্তর কেন্দ্র থেকে। ১২ জন রয়েছেন আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে। এ ছাড়া ১১ জন করে ভোটার রয়েছেন বর্ধমান দক্ষিণ ও মেমারি বিধানসভা কেন্দ্রে। কেতুগ্রাম ও রায়নায় রয়েছেন ১০ জন করে ভোটার। একমাত্র পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভায় এক জনও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার নেই। মঙ্গলকোট, গলসি ও আউশগ্রামে রয়েছেন এক জন করে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।
তবে, নানা এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের মতে, জেলায় ১৮ বছরের উর্ধ্বে তৃতীয় লিঙ্গের সবাইকে তালিকায় অন্তর্ভূক্তি করানো গেলে সংখ্যাটা কয়েক হাজার হওয়ার কথা। কেন এই পরিস্থিতি? তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করা কলকাতার একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রঞ্জিতা সিংহ জানান, জনগণনার জন্য প্রচলিত যে নিয়ম মানা হয় তাতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের ঠিক সংখ্যাটা পাওয়া মুশকিল। সামাজিক পরিস্থিতির কারণে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অনেকেই এখনও নিজেদের বঞ্চিত মনে করেন। ফলে তাঁরা নিজে থেকে এগিয়ে আসতে চান না। আবার জনপ্রতিনিধিরাও এই ধরনের মানুষজনের দাবি-দাওয়া নিয়ে সাধারণত কিছু বলেন না। রাজ্যের ‘ট্রান্সজেন্ডার ওয়েলফেয়ার বোর্ড’ এর প্রাক্তন সদস্য রঞ্জিতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলি এগিয়ে এলে এই ধরনের মানুষজনের অধিকার আদায়ে সুবিধা হয়। সংসদে তাঁদের কথা তুলে ধরার সে ভাবে কেউ নেই। ফলে পরিস্থিতি বদলায় না।’’