গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাখ
ভোট দিতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে পারেন। আশঙ্কা কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের। সে আশঙ্কার কথা লিখিত ভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানালেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বেহালা পশ্চিমের যে বুথে তিনি ভোট দিতে যাবেন, সেখানে তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় তাঁকে হেনস্থা করতে পারেন— এমন আশঙ্কার কথাই চিঠিতে লিখেছেন বেহালা পূর্বের বিধায়ক। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার এবং মহিলা পুলিশ মোতায়েন রাখার আর্জিও জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে বুধবার চিঠিটি দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করে তাতে ‘রিসিভড’ স্ট্যাম্পও মেরে দিয়েছে কমিশন। চিঠির প্রথম অংশে শোভন জানিয়েছেন যে, তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদের মামলা চলছে এবং রোজকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ও সঙ্ঘাত এড়াতে তিনি অনেক দিন ধরেই আলাদা থাকছেন, নিজের বাড়ি আপাতত ছেড়ে দিয়েছেন। শোভন আরও জানিয়েছেন যে, বেহালার মহারানি ইন্দিরা দেবী রোডে তাঁর যে বাড়ি, তাতে এখন রত্না থাকছেন এবং যে বুথে তাঁকে ভোট দিতে যেতে হবে, সেটি ওই বাড়ির প্রায় লাগোয়া।
এর পরে চিঠির দ্বিতীয় অংশ। সেখানে শোভন লিখেছেন যে, তিনি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে খবর পেয়েছেন, ১৯ মে যখন তিনি ভোট দিতে যাবেন, তখন তাঁকে অকারণে হেনস্থা করার পরিকল্পনা করেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর সঙ্গীরা। শোভনের অভিযোগ, তাঁকে আগেও একাধিক বার রত্না ও তাঁর সঙ্গীরা হেনস্থা ও নিগ্রহ করেছেন।
নির্বাচন কমিশনে এই চিঠিই পাঠিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
আরও পডু়ন: শুধু পশ্চিমবঙ্গেই কেন হিংসা হচ্ছে, প্রশ্ন করুন মমতাজিকে, সাংবাদিক সম্মেলনে তোপ আমিত শাহের
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আশঙ্কা, শুধু হেনস্থা বা নিগ্রহ করেই ক্ষান্ত থাকবেন না রত্না, মিডিয়াকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর সম্মান ধুলিসাৎ করার চেষ্টাও করবেন। সে রকম কোনও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি যেন তৈরি হতে দেওয়া না হয় এবং তাঁকে যেন শান্তিতে ভোট দিতে দেওয়া হয়— কমিশনের কাছে আবেদন শোভনের।
কয়েক মাস আগে রায়চকে গিয়ে যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি, মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে সে কথা শোভন মনে করিয়ে দিয়েছেন। দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে সেখানে তাঁর জীবন সংশয় তৈরি হয়েছিল বলে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। কমিশনকে প্রাক্তন মেয়রের অনুরোধ, স্থানীয় থানাকে নির্দেশ দেওয়া হোক, বেহালার শিশুভারতী স্কুলের বুথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হোক এবং মহিলা পুলিশ বা মহিলা নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থাও করা হোক।
আরও পড়ুন: পাঁচ বছরে দেশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেন মোদীজি, দুর্ভাগ্যজনক, তোপ রাহুলের
চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল যে, শোভন চট্টোপাধ্যায় ১৯ মে যখন ভোট দিতে যাবেন, তখন তিনি নিজের বাড়িতেও ঢুকতে পারেন। তাঁর স্ত্রী রত্নাও জানিয়েছিলেন যে, শোভন ওই দিন বাড়িতে আসতে পারেন বলে তিনি শুনেছেন। কিন্তু বুধবার নির্বাচন কমিশনকে যে চিঠি শোভন চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, তাতে বাড়ি ফেরার জল্পনায় ইতি পড়েছে। রত্না তাঁকে ভোটকেন্দ্রে হেনস্থা করতে পারেন বলে যে আশঙ্কা তিনি প্রকাশ করেছেন, তাতে নতুন করে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।