স্পর্শকাতর বুথ নিয়ে সেক্টর অফিসারেরা সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না— বিরোধীদের থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত।
স্পর্শকাতর বুথ নিয়ে সেক্টর অফিসারেরা সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না— বিরোধীদের থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি কমিশনের কাছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সেই রিপোর্ট পাঠিয়েছে।
প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দফতরে গিয়ে সেক্টর অফিসারদের কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ তোলেন। স্পর্শকাতর বুথ নির্বাচন নিয়ে সঠিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁর। রবীনবাবুর অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বিভিন্ন জেলা থেকে রিপোর্ট তলব করে নির্বাচন কমিশন। সদ্য বাঁকুড়া থেকে সেই রিপোর্ট রাজ্যের নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে ৩৭৪টি সেক্টর রয়েছে। প্রতিটি সেক্টরেই পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে সেক্টর অফিসার রয়েছেন। বুথের পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য তাঁরা প্রশাসনকে জানান। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই স্পর্শকাতর বা অতিস্পর্শকাতর বুথ নির্ণয় করা হয়। রবীনবাবু বলেন, “রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন নিরপেক্ষ নয়। সেক্টর অফিসারেরা ঠিক মত কাজ করছেন না। বিষয়টি কমিশনের নজরে এনেছিলাম।” তাঁর দাবি, স্পর্শকাতর বুথ নির্বাচনে সমস্ত রাজনৈতিক দলের মতামত নেওয়ার হোক।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “সর্বদলীয় বৈঠকে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির কাছে স্পর্শকাতর বুথ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও দল সেই তথ্য দেননি।” যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতি দাবি করেছেন, “প্রশাসনের ভূমিকা স্বচ্ছ্ব হলে স্পর্শকাতর বুথ নির্ণয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মতামত জানতে চাইত। কিন্তু তা করা হয়নি। নিজেদের মতো করে সেই কাজ করছে প্রশাসন।” বাঁকুড়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের অভিযোগ, “আমরা কয়েকটি ক্ষেত্রেই শাসকদলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি ভাঙার অভিযোগ জানিয়েছিলাম। প্রশাসনের তরফে আমাদের জানানো হয়েছিল, সমস্যাগুলি মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই করা হয়নি।” জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাওয়ের দাবি, “জেলার বুথগুলিতে আইন-শৃঙ্খলাজনিত পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা ছাড়াও ভোটারদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পুলিশ কর্মীরা সক্রিয় রয়েছেন।”
জেলা প্রশাসনের দাবি, সেক্টর অফিসারেরা নিয়ম মেনেই কাজ করছেন। লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারও বিভিন্ন বুথে ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন। রাজনৈতিক দলগুলির সমস্যা জানতে প্রতি সপ্তাহে সর্বদলয় বৈঠকে বসছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। জেলার বারোটি বিধানসভায় আদর্শ আচরণবিধি মানা হচ্ছে কি না। তা দেখার জন্য ফ্লাইং স্কোয়াড টিম (এফএসটি)-র বিশেষ ট্যাবলো চালু করা হয়েছে।
এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি ভোট দেওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষ আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর কাজও এফএসটি-র তরফে করা হচ্ছে। রুটিন মাফিক জেলার সমস্ত বিডিও, থানার ওসি এবং আইসিদের বুথে বুথে পাঠানো হচ্ছে সাধারণ মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য।