জয় শ্রীরামে সংবর্ধনা তিন মূর্তিকে

চন্দ্রকোনার রাধাবল্লভপুরের তিন যুবক সীতারাম মিদ্যা, বুদ্ধদেব দোলই এবং সায়ন মিদ্যাকে সংবর্ধনা দিল বিজেপি প্রভাবিত সংগঠন ‘ভারত মাতা সমিতি’।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

চন্দ্রকোনা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ০১:৫৩
Share:

জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়েই প্রচারের আলোয় ত্রিমূর্তি। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—সকলের জনসভায় ঘুরেফিরে আসছে তাঁদের স্লোগানের প্রসঙ্গ। এরই মাঝে জুটল সংবর্ধনা।

Advertisement

চন্দ্রকোনার রাধাবল্লভপুরের তিন যুবক সীতারাম মিদ্যা, বুদ্ধদেব দোলই এবং সায়ন মিদ্যাকে সংবর্ধনা দিল বিজেপি প্রভাবিত সংগঠন ‘ভারত মাতা সমিতি’। গত শনিবার চন্দ্রকোনায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের সামনে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ার জন্য আটক করা হয়েছিল সীতারাম, বুদ্ধদেব এবং সায়নকে।

সাদামাঠা ঘরোয়া অনুষ্ঠান। রাধাবল্লভপুরেরই বাসিন্দা জয় পাণ্ডার বাড়িতে গত মঙ্গলবার সংবর্ধনায় আয়োজন করেছিল ‘ভারত মাতা সমিতি’। প্রথমে ওই তিনজনকে পরিয়ে দেওয়া হয় গেরুয়া উত্তরীয়। তারপর গাঁদা ফুলের মালায় বরণ। মিষ্টিমুখ। এরপর ‘ভারত মাতা সমিতি’র কর্মকর্তারা ত্রিমূর্তির কাছে বিশদে জানতে চান গত শনিবারের ঘটনা। ‘ভারত মাতা সমিতি’র মেদিনীপুর জেলার প্রতিষ্ঠাতা জয়দীপ স্বর্ণকার বলেন, “ওই তিন কর্মীর মনোবল বাড়াতে আমরা সংবর্ধনা দিয়েছি। ভবিষ্যতেও পাশে থাকব।”

Advertisement

অমিল থাকলেও এ প্রসঙ্গে জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন বাম আমলের কথা। ছোট আঙারিয়ার ঘটনায় একসময়ে জেল যেতে হয়েছিল তৎকালীন প্রভাবশালী সিপিএম নেতা তপন ঘোষ এবং সুকুর আলিকে। পরে যখন তাঁরা মুক্তি পান, সে সময় তাঁদের নিয়ে শোভাযাত্রা করে সিপিএম। গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় তৃণমূলের মহিলা কর্মীকে জুতোর মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো এবং কান ধরে ওঠবোসের ঘটনায় গ্রেফতার হন যুব তৃণমূল নেতা সঞ্জিত ওরফে লক্ষ্মী কুইলা। দল বহিষ্কার করে লক্ষ্মীকে। পরে জামিনও পেয়ে যান তিনি। ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, তৃণমূলের বিজয় মিছিলে হাঁটছেন সঞ্জিত। গাঁদার মালা পরিয়ে বরণ করিয়ে নেওয়া হয় তাঁকে। বাম আমল হোক বা তৃণমূল। জেল থেকে ফেরার পর সংবর্ধনা মেদিনীপুরের মাটিতে চেনা ছবি। যদিও সীতারাম, বুদ্ধদেব ও সায়নের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু অন্যরকম। কারণ, পুলিশ তাঁদের শুধুমাত্র আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়। তিন যুবককে পুলিশ গ্রেফতারও করেনি।

এ ভাবে সংবর্ধনা মিলবে তা ভাবতেও পারেননি ত্রিমূর্তি। সীতারামের কথায়, ‘‘আমরা সত্যি কোনও অন্যায় করিনি। দল পাশে থাকায় আমরা কৃতজ্ঞ।” একই বক্তব্য বুদ্ধদেব এবং সায়নেরও। দল যে এই তিন কর্মীর পাশে আছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল আগেই। মোদী এবং শাহ দু’জনই জয় শ্রীরাম প্রসঙ্গ তুলে মমতার সমালোচনা করেছিলেন। মোদী হলদিয়ায় বলেছিলেন, “জয় শ্রী রাম বললেও এখানে গ্রেফতার হতে হয়।’’ আর অমিত ঘাটালে মঞ্চেই জয় শ্রী রাম উচ্চারণের পরে তৃণমূল নেত্রীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “যত ধারা পারেন লাগিয়ে দিন।” বিজেপির ঘাটাল জেলার সভাপতি অন্তরা ভটাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল বরাবরই ওই তিন কর্মীর সঙ্গে রয়েছে। ওদের সাহসে বহু কর্মী উজ্জীবিত হয়েছে।’’ চন্দ্রকোনার তৃণমূল বিধায়ক ছায়া দলুই বলেন, ‘‘বিজেপি ওদের নিয়ে মাতামাতি করতে পারে তাতে তৃণমূলের কিছু আসে যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement