এই অ্যাপই ব্যবহার করতে চাইছে বিরোধীরা। নিজস্ব চিত্র
নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ, নির্বাচনের দিন অনিয়মের মতো নানা বিষয়ে সরাসরি নাগরিকেরাই যাতে নজরদারি করতে পারেন তার জন্য নির্বাচন কমিশন ‘সিটিজেন ভিজিল্যান্স অ্যাপ’ (‘সি-ভিজিল’) এনেছে। কিন্তু অ্যাপটির কার্যকারিতা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের ভরসা, ভোটারদের জন্য চালু করা ‘ভোটার হেল্পলাইন’ নামে অ্যাপটি।
সম্প্রতি মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) ডাকা সর্বদল বৈঠকে সি-ভিজিল অ্যাপ নিয়ে সিপিএম-সহ অন্য বিরোধী দলগুলি। সিপিএমের তরফে জানানো হয়, নির্বাচনে কোনও অনিয়ম, হিংসার ঘটনা ঘটলে সেই নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে জিপিএস চালু করে ওই অ্যাপের মাধ্যমেই ভিডিয়ো বা ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে তা অ্যাপে আপলোড করতে হবে। এতে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় মোবাইলের নেটওয়ার্ক নিয়েও সমস্যা আছে। ভিডিয়ো তোলা গেলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপলোড করাটা সমস্যার হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে ‘ভোটার হেল্পলাইন’ অ্যাপটি কাজে আসতে পারে বলে মনে করছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। ওই অ্যাপের মোট ছ’টি ভাগ— ভোটার, ফর্মস, কমপ্লেন্ট, ইভিএম, ইলেকশনস ও রেজাল্টস। ওই অ্যাপ ব্যবহার করে ভোটার তালিকায় অনলাইনে নাম তোলা, সংশোধন, বুথ পরিবর্তন, বিধানসভা কেন্দ্র বদল, সচিত্র পরিচয়পত্র সম্পর্কিত তথ্য, ভোট দেওয়ার পদ্ধতি-সহ নির্বাচনের নানা খুঁটিনাটি জানার ব্যবস্থা রয়েছে। বিরোধী দলগুলির দাবি, ওই অ্যাপের ‘কমপ্লেন্ট’ অংশটি তাদের কাজে আসবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কিন্তু এই অ্যাপ ব্যবহার কেন সুবিধাজনক বলে মনে করা হচ্ছে? বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মতে, এই অ্যাপে জিপিএস ব্যবহার বাধ্যতামূলক নয়। ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে আপলোডের দরকার নেই। কোনও অনিয়ম নজরে এলে ছবি তুলে সেখান থেকে সরে গিয়ে পরে তা অ্যাপে আপলোড করা যাবে। ফলে যেমন ঝুঁকি এড়ানো যাবে, তেমনই ঘটনাস্থলে মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকা, না থাকা বা নেটওয়ার্কের স্পিড নিয়ে দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই। এ ছাড়া অ্যাপ ব্যবহার করে ছবি তোলার পাশাপাশি অন্য মোবাইল বা ক্যামেরার ছবি ব্যবহার করেও অভিযোগ জানানো যাবে অ্যাপটির মাধ্যমে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘সি-ভিজিল অ্যাপের নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিকল্প হিসেবে ‘ভোটার হেল্পলাইন’ অ্যাপটি যাতে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা ব্যবহার করেন, সেই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’’ বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন অ্যাপ থাকতে হবে যাতে মানুষ সহজেই ঝুঁকি এড়িয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তবেই তাঁরা কোনও অনিয়ম দেখলে এগিয়ে আসার সাহস দেখাবেন।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তরুণ রায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ‘ভোটার হেল্পলাইন’ অ্যাপটি ব্যবহার করা সহজ। ঝুঁকি এড়িয়ে অভিযোগ জানানো যায়।’’