আইনশৃঙ্খলাজনিত কারণে উত্তরবঙ্গে রথাত্রার অনুমতি মেলেনি। এ বার শিলিগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী সভার জন্য মাঠের অনুমতি চেয়ে প্রথম ধাপেই ধাক্কা খেল বিজেপি। কাওয়াখালিতে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ-র) জমিতে মোদীর সভার জন্য আবেদন করার পর অনুমতি দেওয়া যাবে কি না, স্পষ্ট করেনি এসডেজিএ কর্তৃপক্ষ। যদিও আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যান করার কোনও জবাব সরকারি ভাবে এসজেডিএ বিজেপিকে দেয়নি।
এই পরিস্থিতিতে অন্য কয়েকটি মাঠে সভা করার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বার বেসরকারি মালিকানাধীন কোনও মাঠই অগ্রাধিকার দিয়ে খোঁজা হচ্ছে। আগামী ৩ এপ্রিল শিলিগুড়িতে মোদীর সভা করার কথা। রাত অবধি লিখিত ভাবে না দিলেও মুখে এসজেডিএর চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বিজেপির সভার জন্য যে মাঠ চাওয়া হয়েছে, তাতে কিছু নির্মাণ কাজ চলছে। তাই ওখানে সভার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।’’
কাওয়াখালিতে সিআরপিএফের উত্তরবঙ্গের সদর দফতরের পাশে একটি জমিতে সভা করার অনুমতি চেয়ে চেয়ে বুধবার দুপুরেই আবেদন জমা করেছিল বিজেপি। এসজেডিএর এই সিদ্ধান্তে দলের তরফে ক্ষোভপ্রকাশ করা হয়েছে। দলের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক রথীন বসু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আসছে। এটা শিলিগুড়ির গর্ব। এরকম পক্ষপাত আচরণ সেই সংস্থা করছে, যাদের ২০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির পরেও কোনও ব্যবস্থা কেউ নেয়নি।’’ আবার জেলা বিজেপির তরফে দার্জিলিং জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূল ভয় পেয়েছে বলে, সর্বতভাবে বিজেপিকে আটকানোর চেষ্টা চলছে।’’
কাওয়াখালিতে সিআরপিএফ ক্যাম্পের পাশের মাঠে সভা হলে কেন্দ্রীয় ওই সংস্থার হেলিপ্যাডেই হেলিকপ্টারও নামার সুবিধা ছিল। সেই হিসেব কষেই ওই মাঠটি চাওয়া হয়েছিল। এসজেডিএ সূত্রের খবর, গত বছরই মাঠটিতে উপনগরী করা হবে বলে একটি শিল্পগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, মাঠটি যদি শিল্প গোষ্ঠীকে দেওয়াই হয়, তাহলে কেন এসজেডিএ অনুমতি দেওয়া বা না দেওয়ার অবস্থানে নেই। তা হলে কেন সেটি সেই শিল্পগোষ্ঠীর বিবেচনার উপরেই ছাড়া হল না? এসজেডিএ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এসজেডিএর সব জমিই লিজে দেওয়া হয়, তাই বলে মালিকানা সেই সংস্থার হাতে থাকে না। জমির মালিক যেহেতু এসজেডিএ তাই এসব ক্ষেত্রে আবেদন এসজেডিএর কাছেই করতে হয়।
মোদীর সভার মাঠ জোগাড়ের প্রথম প্রচেষ্টা মার খেলেও হাল ছাড়ছে না বিজেপি।
দলীয় সূত্রে খবর, মাটিগাড়া ব্লকের বাস্তুবিহার এলাকাতেও আরও একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন মাঠ রয়েছে। সেখানে ২০১৪ সালে সভা করেন মোদী। ২০১৬ সালে বাগডোগরার উত্তরা উপনগরীর মাঠেও প্রচার সভা করেন তিনি। দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত, সভার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। তাই বেসরকারি মালিকানাধীন কোনও মাঠেই সভার সম্ভাবনা অগ্রাধিকার দিয়ে দেখা হচ্ছে।