নেতৃত্বে: মোহন শর্মা
কখনও পাঁচন, কখনও গুড়-বাতাসা। আবার কখনও নকুলদানা খাওয়ানোর কথা বলে শুরুটা করেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। দিনদুয়েক আগে কোচবিহারে বিরোধীদের করলার জুস খাওয়ানোর কথা বলতে শোনা যায় দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকেও। এবার আলিপুরদুয়ারে বিরোধীদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও চা খাওয়ানোর কথা বললেন এই জেলার তৃণমূলের সভাপতি মোহন শর্মা। যা শুনে তাঁকে ইতিমধ্যেই কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
‘সঙ্গদোষে’ই মোহন এইসব কথা বলছেন বলে বিরোধীদের বক্তব্য। কেমন সেই ‘সঙ্গদোষ’? বিজেপির এক জেলা নেতা জানিয়েছেন, দু’দিন আগে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে তৃণমূলের এক কর্মিসভায় রবীন্দ্রনাথ বিরোধীদের করলার জুস খাওয়ানোর কথা বলেন। তুফানগঞ্জ মহকুমাটি কোচবিহার জেলায় হলেও লোকসভা কেন্দ্র হিসাবে আলিপুরদুয়ারে। ফলে ওইদিনের ওই সভায় সেখানে ছিলেন মোহনও। বিজেপির ওই নেতার বক্তব্য, ওই সভা থেকেই এই ধরনের কথা রপ্ত করেছেন মোহন।
মোহন অবশ্য শুধুমাত্র বিরোধীদেরই নয়, নির্বাচনে জেলায় নিরাপত্তায় আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরকে চা খাওয়ানোর কথা বলেন। সেইজন্য দলের নেতা-কর্মীদের ফ্লাক্সে করে চা রেখে দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। বুধবার দলের প্রার্থী দশরথ তিরকের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর মোহন বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও তো মানুষ৷ ওঁরা চা বলয় অধ্যুষিত আমাদের জেলায় এলে অবশ্যই চা খাওয়াব। আমার ফ্লাক্সে সব সময়েই চা থাকে। বিরোধীদের সঙ্গে রাস্তায় দেখা হলে তাঁদেরকেও চা খাওয়াব।”
সেইসঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘কেউ ভুল বুঝিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আমাদের এখানে পাঠাচ্ছে। আমরা চা খাওয়ানোর পাশাপাশি কথা বলে তাঁদের সেই ভুল শুধরে দেব।” একই সঙ্গে আলিপুরদুয়ারে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরে দলেরও যে কড়া নজর থাকবে তাও এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন মোহন। তিনি আরও বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সব সময়ই স্যালুট করি। আলিপুরদুয়ারে এসে ওঁরা যদি ভাল ব্যবহার করেন, তবে অবশ্যই স্যালুট করব। কিন্তু খারাপ ব্যবহার করলে যেখানে জানানোর জানাব।” জেলার রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, চা খাওয়ানোর কথা বলে তৃণমূল নেতা মোহন কার্যত কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কটাক্ষই করেছেন।
জেলা বিজেপির অবশ্য দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী বা বিরোধীদের চা খাওয়ানোর কথা বলে ভোটের আলিপুরদুয়ারের পরিবেশকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করলেও তাতে তৃণমূলের লাভ হবে না। দলের মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘মোহন শর্মারা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আপ্যায়ন জানাতে চা খাওয়াতেই পারেন৷ কিন্তু চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ারের বাগানের শ্রমিকেরা এবার আর তৃণমূলকে আপ্যায়ন করবেন না। তাঁরা আপ্যায়ন করবেন বিজেপিকেই।