প্রকাশ কারাট। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের পরে দেশে নতুন ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠিত হবে এবং তাতে বামেদের ভূমিকা থাকবে বলে দাবি করলেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। বাংলায় শুধু তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে লড়াই চলছে, এই ‘নির্মিত ধারণা’কে খণ্ডন করতে গিয়েই শনিবার কলকাতায় কারাট বলেছেন, নরেন্দ্র মোদীর জমানার অবসান ঘটিয়ে এ বার জোট সরকার তৈরি হবে। কেন্দ্রে ২০০৪ সালের মতো জোট সরকারের মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক প্রকল্প যাতে ফের নেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যেই বামেদের নির্ণায়ক ভূমিকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য জনতার কাছে আবেদন জানিয়েছেন কারাট।
মনমোহন সিংহের নেতৃত্বে ইউপিএ-১ সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল বামেরা। তাদের দাবি মেনেই সে সময়ে সনিয়া গাঁধী-মনমোহনেরা অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি নিয়েছিলেন। রূপায়িত হয়েছিল একশো দিনের কাজ, বনাঞ্চলের অধিকার, শিক্ষার অধিকার, খাদ্য নিরাপত্তার মতো একগুচ্ছ প্রকল্প। সেই তথ্য উল্লেখ করেই এ দিন সন্ধ্যায় বেহালার পর্ণশ্রীতে কলকাতা দক্ষিণের প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায় এবং নাকতলায় বিকাশ ভট্টাচার্যের সমর্থনে জোড়া সভায় সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য কারাট বলেছেন, কেন্দ্রের সরকারে নির্ণায়ক ভূমিকা নেওয়ার লক্ষ্যেই বামেরা এই নির্বাচনে লড়াই করছে। ‘বামেদের ভোট দিয়ে কী হবে’— এই ধারণা নস্যাৎ করার চেষ্টাই করেছেন কারাট। মনমোহনের সরকার নানা প্রকল্প হাতে নিলেও সিপিএমের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক কারাটই অবশ্য পরমাণু চুক্তির কারণ দেখিয়ে সেই সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।
পর্ণশ্রীর সভায় কারাট এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপির সাম্প্রদায়িকতা ও স্বৈরতন্ত্র থেকে মুক্তি পাওয়ার ডাক দিয়ে গোটা দেশে নির্বাচন হচ্ছে। এ রাজ্যে তৃণমূলও বিজেপিকে পরাস্ত করার কথা বলছে। কিন্তু আট বছর ধরে বাংলায় যারা স্বৈরতন্ত্র চালিয়েছে, তারা দেশে কী ভাবে গণতন্ত্র রক্ষা করবে? বিজেপি বড় দল, দিল্লিতে ক্ষমতায় আছে। তাদের স্বৈরতন্ত্রও তাই বড় আকারের। একটা রাজ্যে ক্ষমতায় আছে বলে তৃণমূলের স্বৈরতন্ত্র তুলনায় ছোট আকারের।’’ বাংলায় বিজেপিকে বড় হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তৃণমূল অটল বিহারী বাজপেয়ীর এনডিএ জমানায় এবং সাম্প্রতিক কালে কী ভূমিকা নিয়েছে, ইতিহাসে তা লেখা থাকবে বলেও মন্তব্য করেছেন কারাট।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কলকাতা উত্তরের দলীয় প্রার্থী কণীনিকা বসুর (ঘোষ) প্রচারে এসে এ দিন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটও বলেছেন, সঙ্ঘ-বিজেপি এবং তৃণমূল নিজের নিজের জায়গায় একনায়কত্ব চালাচ্ছে।