রঙিন: ভোট নিয়ে উৎসাহ বাড়াতে কৃষ্ণনগরের রাস্তায় গ্রাফিতি। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
রাস্তা দিয়ে যেতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালেন এক মোটরবাইক আরোহী। রাস্তা জুড়ে কী আঁকা?
ভাল করে এক ঝলক দেখে নিয়ে এক গাল হেসে বললেন, “বাহ! কী অসাধারণ। রাজনৈতিক দলগুলো যে কেন এমন ভাবে ভাবতে পারে না, কে জানে।” বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর শহরে নদিয়া জেলা প্রশাসনিক ভবনের দিকে আসা পথচলতি বহু মানুষের মুখে একটাই কথা— “বাহ, বেশ তো!”
রাস্তা জুড়ে গ্রাফিতি এঁকে চলছে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রচার।
পরিবেশবান্ধব নয়, এমন উপকরণ প্রচারের কাজে ব্যবহার না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফলে, ফ্লেক্স থেকে শুরু করে অন্য প্লাস্টিকের নানা উপকরণ ব্যবহার করতে পারছে না জেলা প্রশাসনও। দেওয়াল দখল করে প্রচার করছে রাজনৈতিক দলগুলি। তা হলে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রচার হবে কী করে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই চিন্তা থেকেই কর্তাদের মাথায় এসেছে অভিনব পন্থা। রাস্তায় আঁকা হলে তা হবে অনেকটাই পাকা। অনেক দিন স্থায়ী হবে। প্রচুর মানুষ দেখতে পাবেন। শিল্পীদের হাতে আঁকা সাধারণ মানুষকে অনেক বেশি করে আকর্ষণ করবে। তবে জেলাশাসক সুমিত গুপ্তের মতে, প্রচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দৃশ্যদূষণ। তাঁর কথায়, “চারদিকে এত ফ্লেক্স, ব্যানার, পোস্টার, দেওয়াল লিখন যে দৃশ্যদূষণ হচ্ছে। মানুষের চোখে লাগছে। আমরা তা থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছি।”
সার্কিট হাউসের সামনে থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনিক ভবনের দিকে যেতে প্রায় ২১০ মিটার ছবি আঁকা হয়েছে। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় আদর্শ বুথের চিত্র, সেখানে কী কী সুবিধা রাখা হবে সে সব জানানো ছাড়াও ভিভিপ্যাট, ইভিএম মেশিন সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। ১২ জন সরকারি আর্ট কলেজ থেকে পাশ করা চিত্রকরের সঙ্গে আরও ১৮ জন শিল্পী মঙ্গলবার থেকে কাজ করছেন। হাত লাগিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কোনও কোনও কর্তাও। পথচলতি সাধারণ মানুষকেও আহ্বান জানানো হয়েছে। গ্রাফিতি শিল্পীদের অন্যতম শাম্ব বিশ্বাস, অর্পণ নাথেরা বলছেন, “আমরা এই ধরনের কাজ আরও বেশি করতে চাই। ফের সুযোগ পেলে খুশিই হব।”