ভোটের কাজে আহত হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিখরচায় চিকিৎসার সুবিধাও দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের সময় আধাসেনাদের থাকা, খাওয়া, অন্যত্র যাওয়া ইত্যাদি ব্যবস্থা প্রথামাফিক করতে হয় রাজ্যকেই। জাতীয় নির্বাচন কমিশন এ বার নির্দেশ দিল, ভোটের কাজে আহত হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিখরচায় চিকিৎসার সুবিধাও দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। এই নির্দেশ পেয়ে জেলাশাসকদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেছে নবান্ন।
১০ কোম্পানি বাহিনী চলে এসেছে পশ্চিমবঙ্গে। আরও ৩৫ কোম্পানি শীঘ্রই পাঠানো হচ্ছে বলে রাজ্যকে জানিয়েছে কমিশন। বুধবার রাতে ঝাড়গ্রামে কয়েক কোম্পানি বাহিনী পৌঁছেছে। কমিশন রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে যদি কোনও জওয়ান আক্রান্ত বা আহত হন, তাঁর জন্য নিখরচায় (ক্যাশলেস) চিকিৎসার বন্দোবস্ত রাখতে হবে রাজ্যকে। কোথায় কী ভাবে সেই পরিষেবা দেওয়া যাবে, তা স্থির করবে রাজ্যই। সরকারি ও বেসরকারি, সব চিকিৎসা পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে প্রশাসনের তরফে সব জেলাশাসকের কাছে নির্দেশ গিয়েছে। কর্তাদের ব্যাখ্যা, নির্বাচনী ব্যয়ের একাংশ পরে কেন্দ্রের কাছ থেকে ফেরত পায় রাজ্য। তবে চিকিৎসার খরচ ফেরত পাওয়া যাবে না।
ভোটকর্মীদের চিকিৎসার জন্যও সমান্তরাল বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের এক কর্তা জানান, সাধারণত ‘ক্যাশলেস’ চিকিৎসার জন্য মাথাপিছু এক লক্ষ টাকা ধরা থাকে। ভোটে গোলমালে কোনও জওয়ানের স্থায়ী অঙ্গহানি হলে পাঁচ লক্ষ এবং মৃত্যু হলে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা আছে। মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হবে যথাক্রমে ১০ এবং ২০ লক্ষ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কমিশন ও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, ভোটে কোন কোন এলাকা উত্তেজনাপ্রবণ বা আইনশৃঙ্খলার দিক থেকে অতিস্পর্শকাতর, সেই তালিকা তৈরি করে রাজ্য সরকারই। তাদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা নির্দিষ্ট হয়। কিন্তু বাহিনীকে কোথায় কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, সেই দায়িত্ব মূলত জেলাশাসক-পুলিশ সুপারদের হাতেই থাকে। ভোটে আধাসেনাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ। এ বারেও সেই পদ্ধতির ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে ‘নজিরবিহীন’ গোলমালের পরে বিরোধী দলগুলি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সরব হয়েছে। কড়া পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ভোট করানোর দাবি তুলছে তারা। কমিশনের সামনে রাজ্যেরও পাল্টা দাবি, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন পুরোপুরি প্রস্তুত। কোথায় কী ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছে, তারও সবিস্তার রিপোর্ট সম্প্রতি কমিশনকে দিয়েছে রাজ্য। এই অবস্থায় আধাসেনাদের জন্য ‘ক্যাশলেস’ চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়ে আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে রাজ্য সরকারকে পুরোপুরি দায়বদ্ধ রাখতে চাইছে কমিশন। বুধবার বিএসএফের সঙ্গে প্রস্তুতি-বৈঠক করেন মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর দফতরের কর্তারা।