প্রচারে: বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। নিজস্ব চিত্র
ভূমিপুত্র থেকে বদলে ‘গোর্খা সুপুত্র’—জিএনএলএফের এই নতুন স্লোগানকে ঘিরেই সরগরম হয়ে উঠছে দার্জিলিং পাহাড়।
দার্জিলিঙে ভূমিপুত্র প্রার্থী চাই বলে পাহাড়, সমতলের এগারোটি দলকে নিয়ে সর্বসম্মত প্রার্থীর খোঁজ শুরু করেছিলেন জিএনএলএফ নেতারা। গত সপ্তাহে দিল্লিতে দলের নেতাদের সঙ্গে বিজেপি এবং বিমল গুরুংদের বৈঠকের পরে বদলে গিয়েছে পুরো ছবিটাই। বিজেপি’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে মণিপুর, দিল্লিবাসী শিল্পপতি রাজু বিস্তাকে দার্জিলিঙে এনে পদ্মফুলের প্রার্থী করেছে সুবাস ঘিসিং-র দল। আর তাই বদল হতে শুরু করেছে ভূমিপুত্রের স্লোগান। সেখানেই জিএনএলএফ নেতাদের মুখে জায়গা করে নিচ্ছে ‘ভূমিপুত্র’-এর বদলে ‘গোর্খা সুপুত্র’।
যা শুনে মোর্চা, তৃণমূলের নেতারা তো বটেই অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও মনে করছেন, রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জেরে স্লোগান বদলাতে হচ্ছে জিএনএলএফকে। একাধিক বৈঠকের পরেও পাহাড়ে ভূমিপুত্র এবং সর্বসম্মত প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে দিল্লির পৌঁছন জিএনএলএফ নেতারা। সেখানে বিজেপি’র প্রার্থীকে জেলায় নিয়ে আসার পরেই নানা মহলে আলোচনা, চর্চা শুরু হয়। অনেকেই মত দেন, বিজেপি প্রার্থীকে আর যাই হোক পাহাড়ের স্থানীয় ভূমিপুত্র বলা যায় না। তাই তাঁকে ‘সুপুত্র’ বলতে হচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র নীরজ জিম্বা বলছেন, ‘‘রাজু বিস্তা গোর্খা সুপুত্র উনি গোটা দেশের গোর্খাদের প্রতিনিধি। আর ভূমিপুত্র মানে কী! ভারতের বাসিন্দা সকলেই আমরা ভূমিপুত্র। দার্জিলিং পাহাড়ে তাঁর বাড়িঘর, জন্ম হতে হবে এমন কথা নেই। বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের বাসিন্দা তো নন।’’ এর পরেই তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘আমরা গোর্খা জাতির মর্যাদা, আত্মসম্মান রক্ষার জন্য লড়াই করছি। সেখানে অনেকেই গোর্খা কুপুত্র হয়ে উঠেছেন, পাহাড়বাসীর সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করছেন।’’
যা শুনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রার্থী অমর সিংহ রাই আদতে পাহাড়ের ভূমিপুত্র। পড়াশুনো থেকে কর্মজীবন তার পাহাড়ে। সারাজীবন মানুষের কাজ করে চলেছেন। এসব আমাদের বলতে হচ্ছে না, পাহাড়বাসী জানেন। সেখানে দিল্লি থেকে প্রার্থী এনে তাকে সুপুত্র, গোর্খা নানা কথা ওঁদের বলতে হচ্ছে।’’ আর বিনয় তামাংপন্থী এক মোর্চা নেতার কথায়, ‘‘রীতিমত ফাঁপড়ে বলেই ভোলবদল করতে হচ্ছে জিএনএলএফকে। প্রার্থীর দায়িত্ব তাঁরা এড়াতে পারবেন না।’’