—ফাইল চিত্র।
ভাবনায় বদল এল নির্বাচন কমিশনের। বদলে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রাথমিক পরিকল্পনাও।
বাংলার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের রিপোর্ট পেয়ে প্রথম দফার ভোটের জন্য আরও বাহিনী পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া খবরে ৪৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছেই। আরও বাহিনী পাঠানো হতে পারে। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের অন্তত ৭৫ ভাগ বুথে যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যায়, সেটা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করছে কমিশন।
বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক ঝাড়খণ্ড যাওয়ার আগে কমিশনকে রিপোর্ট দিয়ে প্রথম দু’দফা ভোটের জন্য আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে বলেন। ‘‘৪৯ কোম্পানি বাহিনী থাকবেই। তার মধ্যে জঙ্গলমহল থেকে ২৯ কোম্পানি তুলে আলিপুরদুয়ার-কোচবিহারে পাঠানো হবে,’’ এ দিন বলেন বিবেক।
দিন তিনেক আগেও বাহিনী নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। নির্বাচন সদন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, টহলদারির জন্য পাঠানো ১০ কোম্পানি বাহিনী দিয়েই প্রথম দফার ভোট সারতে হবে। কমিশন অবশ্য রাজ্যের জঙ্গলমহলে মোতায়েন ৩৫ কোম্পানি বাহিনী ভোটের কাজে তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। প্রথম দিকে তাতে সায় দেয়নি রাজ্য। অগত্যা ১০ কোম্পানি বাহিনী দিয়েই ভোট সারতে চেয়েছিল কমিশন। বিরোধী দলগুলি এই নিয়ে সরব হয়। প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটের দাবি জানায় বিজেপি-ও। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বুধবার ব্রিগেডের সভামঞ্চেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানান, পশ্চিমবঙ্গের ভোটে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলছে না।
বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে শুরু করে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কমিশনকে পশ্চিমবঙ্গে আরও বাহিনী পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে বলে নবান্নের খবর। তবে রাজ্যের হাতে থাকা ৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর পুরোটা যাতে ভোটের ব্যবহার করা যায়, সেই চাপও সৃষ্টি করা হয়েছে। নবান্নের বক্তব্য, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা সীমানা দিয়ে মাওবাদীরা মাঝেমধ্যে বাংলায় ঢুকছে। ফলে পুরো বাহিনী তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, রাজ্য ৩৫ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানি বাহিনী ভোটের কাজে কোচবিহার-আলিপুরদুয়ারে পাঠাবে। ফলে সব মিলিয়ে ৩৯ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যেই এখন রয়েছে। এ দিন আরও ১০ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর কথা কমিশন রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছে।
কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘আরও বাহিনী আসতে পারে বলে দিল্লি থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে কত কোম্পানি পাওয়া যাবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। অতিরিক্ত বাহিনী পাওয়ার মানে আরও বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যাবে।’’
প্রথম দফায় রাজ্যে ভোট হবে প্রায় ৩৮০০ বুথে। ৪৯ কোম্পানি বাহিনী পাওয়া গেলে প্রায় ১৫০০ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা সম্ভব হবে। যদিও অন্তত ৭৫ ভাগ বুথে বাহিনী রাখার পরিকল্পনা করছে কমিশন।