কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি মিললেই প্রার্থী ঘোষণা হবে।—ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে বসিরহাট কেন্দ্রে বামফ্রন্টের প্রার্থী পল্লব সেনগুপ্ত। কিন্তু বামফ্রন্ট থেকে প্রার্থী দেওয়ায় কংগ্রেসের একাংশ ক্ষুব্ধ। আবার বামফ্রন্টের অনেকেই মনে করছেন, ওই আসনে কংগ্রেসের কেউ দাঁড়ালেই ভাল হত। এর মধ্যে অবশ্য জোট নিয়ে সংশয় দেখা দেওয়ায় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আলাদা করে প্রার্থী নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা শুরু করার সময়ই কংগ্রেসের অন্যতম দাবি ছিল, বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রটি যেন কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বসিরহাট কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে এমন একটা সম্ভবনাও ছিল। কিন্তু বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকায় এই কেন্দ্রে বাম শরিক সিপিআইয়ের পল্লব সেনগুপ্তের নাম দেখে কংগ্রেস কর্মীরা রীতিমতো হতাশ।
এ বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেস কর্মসমিতির সদস্য তথা বসিরহাটের বাসিন্দা অমিত মজুমদার বলেন, ‘‘বসিরহাটে এখন কংগ্রেসের একজন বিধায়ক, ছ’জন পুর কাউন্সিলর ও কুড়ি জন পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছে। এই কেন্দ্রে আমরাই এগিয়ে রয়েছি। সে জন্য এই আসনটিতে আমরাই লড়ব ভেবেছিলাম। বামেরা কথা না রাখায় আমাদের অনেক কর্মীই ক্ষুব্ধ।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কংগ্রেসের রাজ্য এবং দিল্লি নেতৃত্বের কথায়, ‘‘জোট হলে আমরা অবশ্যই লড়াই করব। কিন্তু আশাহত নিচু তলার কর্মী-সমর্থকেরা। জোটের পক্ষে তাঁরা সামিল হবে বলে তো মনে হয় না।’’ গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের প্রচার শুরু হয়েছে। তৃণমূল প্রার্থী নুসরতের সঙ্গে পাল্লা দিতে বিজেপি প্রার্থী খুঁজছে। সে সময় শুক্রবার রাজ্য বামফ্রন্টের পক্ষে বসিরহাট কেন্দ্রে সিপিআই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। গত ১৯৫২ সাল থেকে বসিরহাট লোকসভাকেন্দ্রে সিপিআই লড়ছে। তবে এ বারে সিপিআইয়ের পল্লব সেনগুপ্তকে বসিরহাট কেন্দ্রের প্রার্থী করার দাবিকে বামফ্রন্টের অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। সিপিআইয়ের জাতীয় পরিষদের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পল্লব সেনগুপ্ত দিল্লির নেতা। তাঁর রাজনীতি জীবন শুরু হয় ছাত্র-যুব আন্দোলন দিয়ে। প্রথম থেকেই বসিরহাট কেন্দ্রে পল্লবের নাম শোনা যাচ্ছিল। তিনি গত ১০ মার্চ বসিরহাটে ঘুরেও গিয়েছেন। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শ্রীদীপ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘সর্বভারতীয় ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া পল্লব সেনগুপ্ত প্রার্থী হওয়ায় আমরা খুশি। বসিরহাট লোকসভা থেকে আগে যাঁরা সাংসদ হয়েছেন সেই ধারা বজায় রেখে প্রার্থী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস পল্লববাবুকে নিয়ে আমরা জয়ী হতে পারব।’’ সিপিএম নেতা এমন দাবি করেছে ঠিকই। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, বর্তমান অবস্থার নিরিখে বামেরা চেয়েছিল বসিরহাটে একজন পরিচিত মুখকে প্রার্থী করা হোক যাতে তৃণমূল প্রার্থীর চোখে চোখ রেখে লড়তে পারে। তেমন না হওয়ায় কংগ্রেসের মতই খানিকটা হলেও হতাশ বামফ্রন্টের কিছু কর্মী-সমর্থকদের একাংশ।