প্রতীকী ছবি।
জলপাইগুড়িতে জয়ন্ত রায়ের ইস্তফা গ্রাহ্য হয়েছে, বীরভূম কেন্দ্রে রেজাউল করিমের ভাগ্যে তা এখনও জোটেনি। দু’জনেই সরকারি চিকিৎসক। জয়ন্ত বিজেপি প্রার্থী, রেজাউল সিপিএমের। এ বার নদিয়ার রানাঘাটেও বিজেপির চিকিৎসক প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর ইস্তফা গ্রাহ্য হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
কলকাতার বহু হাসপাতালে কাজ করার পরে অগস্টে নদিয়ার হাঁসখালি ব্লকের বাদকুল্লা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগ দিয়েছিলেন মুকুটমণি। কিন্তু ভোটে দাঁড়াতে গেলে তাঁকে ওই চাকরি ছাড়তে হবে। বৃহস্পতিবার তিনি হাঁসখালি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এমনিতে কোনও সরকারি ডাক্তার ভোটে দাঁড়াতে চাইলে তাঁকে না আটকানোই দস্তুর। কিন্তু সামনে রেজাউল করিমের উদাহরণও রয়েছে। তাঁর ইস্তফা স্বাস্থ্য দফতর গ্রহণ করেনি। ফলে ভোটে দাঁড়ানোও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইস্তফা গ্রাহ্য হওয়ার যে সম্ভাবনা নেই, সেটাও এক রকম বোঝানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের যুক্তি, রেজাউলের বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে একটি মিছিলে অংশগ্রহণের জন্য বিভাগীয় তদন্ত চলছে। তা শেষ না হলে ইস্তফা গ্রহণ করা যাবে না।
কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর ও সরকারি চিকিৎসক মহলের একাংশের মতে, বিভাগীয় তদন্তটা আসল কারণ নয়। রেজাউল দীর্ঘদিন ধরেই কট্টর সরকার বিরোধী চিকিৎসক নেতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর চাঁচাছোলা মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। সেটাই তাঁর ইস্তফা গ্রাহ্য না হওয়ার নেপথ্য কারণ। তাই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক জয়ন্ত রায়ের ইস্তফা গ্রাহ্য হলেও তাঁর হয়নি।
সরকারি চিকিৎসকদের অনেকেরই ধারণা, সেই হিসেবে মুকুটমণির ইস্তফা গ্রাহ্য হওয়াই স্বাভাবিক। কেননা, এর আগে কখনও রাজনীতির ছায়া মাড়াননি তিনি, সরকার-বিরোধী কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা যায়নি।
বামমনস্ক সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর রাজ্য সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘অতীতে অনেক চিকিৎসকের ইস্তফা দফতর আটকে দিয়েছে জনপরিষেবা ব্যাহত হওয়ার যুক্তিতে। তবে ভোটে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অনুমোদন আটকানোর কথা নয়।’’ মুকুটমণির মতে, “আমার ইস্তফা গ্রাহ্য না-হওয়ার কারণ নেই। চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময়ে এমন শর্ত ছিল না যে আগে জানিয়ে চাকরি ছাড়তে হবে।”
কিন্তু সরকার যদি ইস্তফা গ্রাহ্য না করে? মানস গুমটার মতে, ‘‘সে ক্ষেত্রে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে (স্যাট) মামলা করতে পারেন উনি। যদিও তা সময়সাপেক্ষ।’’ মুকুটমণি অবশ্য বলছেন, “স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা আমার ইস্তফা গ্রহণ করবেন বলেই আমি আশাবাদী।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নদিয়া জেলাশাসক তথা নির্বাচনী আধিকারিক সুমিত গুপ্ত ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি আজই ইস্তফা দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী কতগুলি বিষয় খতিয়ে দেখতে হয়। ফলে, ইস্তফা গ্রাহ্য হবে কি না তা এখনই বলা সম্ভব নয়।’’