সিআইএসএফ গুলি চালায় বলে শুরু থেকেই অভিযোগ করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।
গত রবিবার ভোটের কেশপুরে ধুন্ধুমার বেধেছিল। বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ, ইটবৃষ্টির মাঝে চলেছিল গুলিও। সে দিন ঠিক কত রাউন্ড গুলি চলেছিল কেশপুরে— জল্পনা চলছিল। পুলিশের সূত্রে এ বার জানা গেল, ভোটের দিন কেশপুরে মোট ৬ রাউন্ড গুলি চলেছে। গুলি চালানোর কথা স্বীকার করে পুলিশকে এ কথা জানিয়েছে সিআইএসএফ-ই।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই দিন যে ৬ রাউন্ড গুলি চলেছে তা সিআইএসএফ- ই জানিয়েছে।’’ ভোটের দিনের ঘটনায় সিআইএসএফের তরফে পুলিশের কাছে এক অভিযোগও জানানো হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া মানছেন, ‘‘সিআইএসএফের অভিযোগ এসেছে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও শুরু হয়েছে। গুলি চালানোর ঘটনায় সিআইএসএফের বিরুদ্ধেও পুলিশের কাছে অভিযোগ এসেছে। তারও তদন্ত শুরু হয়েছে।
ভোটের দিন কেশপুরের দোগাছিয়ায় গুলি চলেছিল। দোগাছিয়ায় ঠিক কী হয়েছিল, কেন গুলি চালাতে হয়েছে, অভিযোগপত্রে তা সিআইএসএফ জানিয়েছে বলে পুলিশেরই এক সূত্রে খবর। সিআইএসএফের দাবি, বাধ্য হয়েই তারা গুলি চালিয়েছে। না হলে বড়সড় অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে যেতে পারত।
ভোটের দিন কেশপুর দিনভর অশান্ত ছিল। বিজেপি প্রার্থী ভারতীকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তৃণমূল। ‘গো ব্যাক’ স্লোগান উঠেছিল। ভারতীর কনভয় লক্ষ করে দফায় দফায় ইটবৃষ্টি হয়েছিল। সে দিন রক্তও ঝরেছিল এই তল্লাটে। দোগাছিয়ায় তৃণমূল কর্মীদের ‘হামলার’ পরে ভারতীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানেরা গুলি ছোঁড়েন। গুলিতে জখম হন বক্তিয়ার খান নামে এক তৃণমূল কর্মী। তার আগে তৃণমূল কর্মীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে মাথা ফেটে রক্ত বেরোয় কিষান কুমার এক সিআইএসএফ জওয়ানের। পুলিশের কাছে সিআইএসএফের দাবি, ওই দিন শুরুতে তারাই আক্রান্ত হয়েছিল। বিজেপি প্রার্থীও আক্রান্ত হন। সংবাদমাধ্যমের একের পর এক গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি ক্রমে জটিল হয়ে ওঠে। এরপরই গুলি ছোড়া হয়েছে।
বস্তুত, ঘটনার পরে গুলি চালনা নিয়ে গ্রামবাসীদের এক-একজন এক-এক রকম দাবি করতে থাকেন। কারও বক্তব্য ছিল, ৪-৫ রাউন্ড গুলি চলেছে। কারও বক্তব্য ছিল, ৮-১০ রাউন্ড গুলি চলেছে। এ নিয়ে পুলিশের একাংশও খানিক বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। সিআইএসএফের স্বীকারোক্তির পরে অবশ্য সেই বিভ্রান্তি দূর হয়েছে।