আঘাত দেখাচ্ছেন কাটোয়ার বিজেপি নেতা। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি-র দুই নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠল দুই বর্ধমানে। সোমবার সকালে কাটোয়ার করুই ও রাতে কাঁকসার বনকাটির এগারো মাইলে তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ বিজেপির। যদিও তৃণমূল নেতারা তা মানতে চাননি।
সোমবার সকালে কাটোয়ার করুই বাসস্ট্যান্ডে বাজার করতে যান বিজেপির কাটোয়া ২ মণ্ডল সভাপতি স্বপন দত্ত। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আচমকা স্থানীয় তৃণমূল কর্মী গোপাল মাজি এসে আমার উপরে চড়াও হয়। কিল-চড় মারে ও খুনের হুমকি দেয়।’’ তাঁর দাবি, স্থানীয় বাসিন্দারা তখন তাঁকে উদ্ধার করেন। কিন্তু দুপুরে হাঁসুয়া নিয়ে গোপাল ফের বাড়িতে হামলা করে। তাঁর চিৎকার শুনে পড়শিরা এসে গোপালকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন বলে দাবি স্বপনবাবুর।
ধৃতকে মঙ্গলবার কাটোয়া আদালতে তোলা হলে জামিন মঞ্জুর হয়। বিজেপির জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ, দলের কর্মীদের শাসানো, প্রচারে বাধা দেওয়া, দেওয়াল লিখন নষ্ট করছে শাসকদের কর্মীরা। এখনও অবধি কাটোয়া মহকুমায় এই রকম ১৩টি অভিযোগ জমা দিয়েছেন তাঁরা, দাবি বিজেপির বর্ধমান পূর্বের সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভোট ঘোষণার পর থেকে এখনও অবধি কাটোয়ার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড, পলাশি, খাজুরডিহি, মণ্ডলহাট, সরগ্রাম, করুই, পলসোনা, পাঁজোয়া, মঙ্গলকোটের দুরমুট, কেতুগ্রামের মৌগ্রামে বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ হয়েছে। বেশিরভাগেরই নিষ্পত্তি হয়েছে। কিন্তু শাসকদলের সন্ত্রাসে আমাদের কর্মীরা আতঙ্কিত।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপির কাঁকসা ১ মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজীব রায় অভিযোগ করেন, সোমবার রাতে আচমকা তাঁর মোবাইলের দোকানের সামনে জড়ো হয় বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। রাজীববাবুর অভিযোগ, ‘বিজেপি করলে খুন করা হবে’ বলে হুমকি দিয়ে তাঁকে মারধর করে তারা। দোকানের বোর্ডও ভেঙে দেয়। তাঁর বাড়ির দরজা-জানলাতে লাঠি-রড নিয়ে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ।
ওই বিজেপি নেতার দাবি, তাঁর দোকানের পাশে তাঁদের দলের এক কর্মীর একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। সেই দোকানেও হামলা হয় বলে অভিযোগ রাজীববাবুর। তিনি জানান, পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের অ্যাপে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বনকাটি পঞ্চায়েতের প্রধান পিন্টু বাগদির নেতৃত্বে এই হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। পিন্টুবাবুর অবশ্য পাল্টা দাবি, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ। বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে এই ঘটনা ঘটছে।’’ কাঁকসার বিজেপি নেতা রমন শর্মা জানান, ব্লক প্রশাসনের কাছে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বুদবুদের দেবশালা পঞ্চায়েতের মৌকোটা গ্রামে বিজেপির পতাকা পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই গ্রামে বিজেপির বুথ সভাপতি কুবীর ঘোষের দাবি, কয়েক দিন আগে বিজেপির পতাকা খুলে তৃণমূল সেখানে নিজের পতাকা লাগিয়ে দেয়। তাঁরা অভিযোগ জানানোর পরে ফের বিজেপির পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সোমবার রাতে সেগুলি পুড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল, অভিযোগ কুবীরবাবুর। যদিও দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূল নেতা শ্যামল বক্সীর বক্তব্য, ‘‘এমন ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নন।’’