প্রচার: পুরুলিয়ায় বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মীরা। ছবি: সুজিত মাহাতো
একপক্ষের দাবি, ‘কন্যাশ্রী-রূপশ্রী- রাজ্যে মহিলা ক্ষমতায়ণের মূল চাবিকাঠি। অন্যপক্ষের পাল্টা দাবি, ‘উজ্জ্বলা জ্যোতি যোজনাই’ মহিলাদের একমাত্র আলোর দিশারী। আবার এই দুই পক্ষকে কটক্ষ করে তৃতীয়পক্ষের দাবি, তাদের জমানায় রাজ্যে শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানে মহিলারা অনেক বেশি এগিয়েছিলেন। মহিলা ভোটারদের মন জয়ে পুরুলিয়ায় ভোট রণাঙ্গনে ঘুঁটি সাজাচ্ছে শাসক-বিরোধী সব পক্ষের প্রমীলা সংগঠন।
পুরুলিয়ার মোট ভোটার সংখ্যার প্রায় অর্ধেকই মহিলা। তাঁদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা শুরু করেছে শাসক-বিরোধী সবপক্ষই। সক্রিয়তার বিচারে তারতম্য থাকলেও ভোটের আগে মাঠে ময়দানে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল-বিজেপি-সিপিএম, সব দলেরই প্রমীলা বাহিনীকেই।
তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের কর্মীরা মহিলা ভোটারদের পাশে পেতে পাড়ায় পড়ায় সভা করছেন। অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উজ্জ্বলা জ্যোতি প্রকল্প’কে হাতিয়ার করে প্রচারে নেমেছে বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মীবাহিনী। সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কর্মীদের দাবি, এখন মহিলাদের উন্নয়ন হয় কম, তাঁদের উপরে নির্যাতন হয় বেশি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপির দাবি, মহিলা বাহিনীর সক্রিয়তার বিচারে তাঁরা বিরোধী পক্ষের থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘মহিলা ভোটারদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হওয়ায় মহিলা সংগঠনকে অনেক আগেই রাস্তায় নামানো হয়েছে।’’ মহিলা ভোটারদের কাছে কী বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন দলের প্রমীলা বাহিনী?
বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সভাপতি কাবেরী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি ঘুরে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বলা জ্যোতি যোজনার কথা বলছি। ওই প্রকল্পের ফলেই মহিলাদের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটেছে।’’ এবার দেওয়াল লেখার কাজেও মহিলা কর্মীদের অংশগ্রহণ অতীতের ধথেকে বেড়েছে বলে মনে করেন কাবেরীদেবী। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার ছুঁয়েছে। মহিলা মোর্চার উদ্যোগে জেলায় বড়মাপের মিছিলের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।’’ সর্তিয়তার বিচারে তৃণমূল বা সিপিএমের মহিলা সংগঠনের থেকে তাঁরা অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজেপির মহিলা নেত্রী।
কী বলছে তৃণমূলের মহিলা সংগঠন?
মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী নিয়তি মাহাতোর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কন্যাশ্রী এবং রূপশ্রীর মত প্রকল্পগুলি নিয়ে প্রচার করছি। মহিলারা নিজেদের অভিজ্ঞতাতেই বুঝেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী ভাবে রাজ্যর মহিলাদের উন্নয়ন করেছেন।’’ তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, এখনও সার্বিক ভাবে পথে নামানো যায়নি দলের মহিলাকর্মীদের। এক নেত্রীর কথায়, ‘‘আমরা বুথে-বুথে কর্মিসভা করছি। এখন সেই সভাগুলি চলছে।’’
গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির জেলা সম্পাদিক বিলাসীবালা সহিসের দাবি, ‘‘গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগ শুরু করেছেন মহিলা কর্মীরা।’’ সংগঠনের আরেক নেত্রীর অভিযোগ, ‘‘গোটা রাজ্যে নারী নির্যাতন বেড়েছে। এটাই প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে। নির্বাচনের প্রচারে মহিলাদের নিয়ে একগুচ্ছ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’