হুগলির বিজেপির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয়।
শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্যের সেচমন্ত্রীকে এক মাসের মধ্যে জেলে ঢোকানোর হুমকি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর শনিবার রাজ্যের এক মন্ত্রী এবং তৃণমূলের দুই বিধায়কের গ্রেফতার নিয়ে ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করলেন হুগলির বিজেপির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাতেই কেন্দ্রীয় সংস্থা ঘিরে শাসক-বিরোধী তরজার সুর চড়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে আগে থেকে গ্রেফতারির কথা বলে শুভেন্দুর মতোই তৃণমূলের তোপের মুখে পড়েছেন বিজেপি সাংসদ।
ধনেখালিতে লকেট এ দিন বলেন, ‘‘সিঙ্গুর, ধনেখালি ও চুঁচুড়ার মন্ত্রী-বিধায়করা সিবিআই-ইডির জালে ধরা পড়বেন। এঁরা জনতার টাকায় চাকরি কিনেছেন। জনতার টাকা লুট করেছেন।’’
ধনেখালি ও চুঁচুড়ার দুই বিধায়ক তৃণমূলের অসীমা পাত্র এবং অসিত মজুমদার। আর সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না রাজ্যের মন্ত্রীও। নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁরা গ্রেফতার হতে পারেন বলে লকেট এ দিন যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। অসিত অবশ্য বলেন, ‘‘লকেট আমার কাছে প্রায় ২১ হাজার ভোটে হেরেছেন। আমার নামে ভূত দেখেন। তাই মিথ্যা অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার ওঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।’’ অসীমাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। মন্ত্রী বেচারাম অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। মানহানির মামলা প্রসঙ্গে লকেটের বক্তব্য, ‘‘করুন না! সত্যি-মিথ্যা প্রমাণ হয়ে যাবে। মানুষ সব জানেন।’’
সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে জেলে ঢোকানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করেছিল তৃণমূল। প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় এজেন্সি কি বিজেপির কথায় চলে? লকেটের এই মন্তব্যে তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে। এই মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূলের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য আগেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
গ্রেফতার হয়েছেন হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর লকেটের এই মম্তব্য। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘শান্তনু জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের মাখামাখির ছবি রয়েছে। তাঁদের নামও আসা উচিত। টাকা যাঁদের পকেটে ঢুকেছে, তাঁদেরও গ্রেফতার করা উচিত।’’
জবাবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘লকেট ওই এলাকার সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও বিধানসভায় বিজেপি হেরেছে। নিজের এলাকার বাকি বিধানসভা কেন্দ্রেও গো-হারা হেরেছেন। ফলে কুৎসাই ওঁর একমাত্র ভরসা। তবে ওখানকার মানুষ সব রকম উন্নয়নের সুবিধা পেয়েছেন। তাই আবার বিজেপিকে হারানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন।’’