বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হচ্ছে লোকাল ট্রেন ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে বৃহস্পতিবার থেকে লোকাল ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে আপাতত আগামী ১৪ দিন এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়েও রেলের নিত্যযাত্রীদের একাংশের প্রশ্ন, এ বার তাঁদের রুজি-রুটির কী হবে?
করোনা আবহে আট মাস বন্ধ থাকার পর গত ১১ নভেম্বর চালু হয়েছিল লোকাল ট্রেন। প্রায় ছয় মাস চলার পর আবার বন্ধ হচ্ছে শহরতলির ‘লাইফ লাইন’। দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে প্রতিদিন লক্ষ মানুষ কলকাতায় যান কাজে। তাঁদের লোকাল ট্রেনই ভরসা। গতবার ট্রেন বন্ধের সময় ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছিল যাত্রীদের। বিক্ষোভ-অবরোধ শুরু করেছিলেন তাঁরা। পরে ট্রেন চালু হওয়ায় স্বাভাবিক হতে শুরু করে জনজীবন।
কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে গণপরিবহণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লোকাল ট্রেন। সেই ট্রেন বন্ধ থাকলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে এটা স্বাভাবিক। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের অনেকে মনে করেন, করোনা যে ভাবে বাড়ছে তাতে ট্রেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতেই হত সরকারকে। অবশ্য নিত্যযাত্রীদের একাংশের মতে শুধু ট্রেন বন্ধ রেখে শৃঙ্খল ভাঙা যাবে না। কর্মস্থল খোলা থাকলে সেখানে কোনও ভাবে পৌঁছাতে হবে। তখন বাসে বা অন্য কোনও ভাবে তাঁরা যাবেন। লকডাউন হলে সেই তাগিদ থাকবে না। যাঁরা অল্প বেতনে বেসরকারি জায়গায় কাজ করেন, তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে।
লোকাল ট্রেন বন্ধের জেরে প্রবল সমস্যায় পড়বেন হকাররা। কিন্তু ‘পেটের থেকে মানুষের জীবন আগে’। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন তাঁরা। বুধবার পূর্ব রেলের হকার সংগঠনের এক নেতা বলেন, ‘‘আরও একটু ভাবনা চিন্তা করা উচিত ছিল রাজ্য সরকারের। লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ায় সমস্ত চাপ দিয়ে পড়বে সরকারি বাসের উপর। তার থেকে কি সংক্রমণ বাড়বে না? তাই আমরা মনে করি, লোকান ট্রেন পুরোপুরি বন্ধের আগে সরকার বিষয়টি নিয়ে আরও একটু চিন্তা-ভাবনা করুক।’’