বিডিআর রেলপথে লোকাল ট্রেন চালু। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে শুক্রবার থেকে দক্ষিণ পূর্ব রেলের বাঁকুড়া দামোদর রিভার(বিডিআর) রেলপথে লোকাল ট্রেনের চাকা গড়াতে শুরু করল। চলতি মাসের গোড়া থেকে রাজ্যের অন্যত্র লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হলেও বঞ্চিত ছিলেন বিডিআর রেলপথের যাত্রীরা। পরবর্তীতে ঘোষণা করেও রেকের অভাবে লোকাল ট্রেন চালানো হয়নি ওই রেলপথে। শুক্রবার বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ যাত্রীরা। তবে রেলের তরফে জানা গিয়েছে, আপাতত একটি লোকাল ট্রেনই চালানো হবে।
বাঁকুড়া জেলা ও পূর্ব বর্ধমান জেলার একাংশ মানুষের কাছে বিডিআর অন্যতম লাইফলাইন। এক সময় এই রেলপথে ন্যারোগেজ ট্রেন চলাচল করলেও গত প্রায় দেড় দশক ধরে ওই রেলপথ ব্রডগেজ করা হয়েছে। দাবি মেনে সম্প্রতি ওই রেলপথে বৈদ্যুতিকরণের কাজও শেষ হয়েছে। করোনা পূর্ববর্তী সময়ে এই পথে দু’টি লোকাল ট্রেন চালাত দক্ষিণ পূর্ব রেল। খুব অল্প সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে এই ট্রেনে যাতায়াতের সুযোগ মেলায় অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল লোকাল ট্রেনগুলি। কিন্তু করোনা সব ওলটপালট করে দেয়। করোনার প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে দু’দফায় দীর্ঘ দিন এই লাইনে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। অগত্যা যাতায়াতের জন্য সড়ক পথকেই বেছে নিতে হয়েছিল দুই জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে।
সম্প্রতি রাজ্য সরকার লোকাল ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিলে ১ নভেম্বর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু ওই দিন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনে নির্দেশিকা এসে না পৌঁছানোয় লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি বিডিআর রেলপথে। পরে ৫ নভেম্বর থেকে বিডিআর রেলপথে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরুর কথা ঘোষণা করেন রেল কর্তৃপক্ষ । কিন্তু রেলের দাবি, রেক না মেলায় শেষ মুহূর্তে ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হয়। পরে ফের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেলের তরফে জানানো হয়, ১২ নভেম্বর থেকে বিডিআর রেলপথে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হবে। সেই ঘোষণা মতো শুক্রবার অবশেষে ফের লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় খুশি এই রুটের সাধারণ যাত্রী থেকে নিত্যযাত্রী সকলেই।
সোনামুখী থেকে বিডিআর লোকাল ট্রেনে চড়ে বাঁকুড়ায় এসেছিলেন মনোজ চক্রবর্তী । তিনি বলেন, “ দীর্ঘ দিন পরে লোকাল ট্রেন চালু হওয়ায় এই রুটের যাত্রীদের কিছুটা সুবিধা হল। এই সিদ্ধান্ত আরও আগে নেওয়া প্রয়োজন ছিল।” আর এক যাত্রী সত্যনারায়ণ নিয়োগী বলেন, “অবশেষে এই রুটে একটি লোকাল ট্রেন চালু হল। দ্বিতীয়টি দ্রুত চালু হলে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের যাতায়াতের সমস্যার সমধান হয়ে যাবে।”