ঘর সাজানোর পসরা নিয়ে মেলায় হাজির ব্যবসায়ীরা। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মেলায় তাঁরা পৌঁছে যান পসরা নিয়ে। কিন্তু এ বছরটা তো অন্যান্যবছরের থেকে একেবারে আলাদা। লকডাউনের দীর্ঘ সময় কালে বন্ধ ছিল সব কিছুই। কিন্তু লকডাউন পর্ব কাটলেও মেলাকেন্দ্রিক যাঁদের জীবিকা, তাঁরা এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। কারণ, প্রায় গোটা বছর ধরেই মেলা বন্ধ ছিল দেশ জুড়ে। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বেশ কিছু জায়গায় সবে শুরু হয়েছে মেলা। তবে সেখানেও করোনা-নিয়ম মেনে মেলা হওয়ায় ব্যবসায়ীদের তেমন কোনও সুরাহা হয়নি।
মেদিনীপুর শহরে প্রতি বছরই বড়দিন উপলক্ষে নির্মল হৃদয় আশ্রমের মাঠে মেলা বসত। কিন্তু এ বারে সেই চিত্র পুরোটাই বদলে গিয়েছে করোনা আবহের কারণে। মেলার জন্য গেটে পড়েছে তালা, তবে গির্জার দরজা রয়েছে খোলা। ভিড় এড়িয়ে শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে চলছে সেখানে প্রবেশ।
মেলা হবে জেনে প্রায় ৮ মাস পর একটু আশার আলো নিয়ে মেদিনীপুরে ওই মেলায় দোকান দেওয়ার জন্য হাজির হয়েছিলেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে তিন জন ফিরে না গিয়ে মেলামাঠের উল্টো দিকে ফাঁকা জায়গায় পসরা নিয়ে বসেছেন। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন মাটির তৈরি ঠাকুরের মূর্তি থেকে ফুলদানি-সহ ঘর সাজানোর পসরা নিয়ে হাজির মেলা ব্যবসায়ী দীপঙ্কর ঘোষ, স্বপন দাস, খোকন দাস। তাঁদের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর এলাকায়।
আরও পড়ুন: ‘দুধ চাইলে ক্ষীর দেব, বাংলা চাইলে চিরে দেব’, সৌগত রায়ের তোপ বিজেপি-কে
আরও পড়ুন: ভোটের আগে চিটফান্ড-কাণ্ডে কি রাঘববোয়াল খুঁজছে সিবিআই
দীপঙ্কর জানান, লকডাউনে তাঁর কোনও কাজ ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতেই ছিলাম। এখন অনেক জায়গায় মেলা হচ্ছে। প্রতি বছর মেদিনীপুরে এই মেলায় মাটির কারুকার্যের পসরা নিয়ে হাজির হতাম। এ বারেও বিষ্ণুপুর থেকে মাটির হাতের তৈরি সরঞ্জাম নিয়ে গাড়ি ভাড়া করে এসেছি মেদিনীপুরে। এসে জানতে পারি মেলা বন্ধ রয়েছে। প্রচুর টাকা দিয়ে ওই পসরা কিনে ফেলেছি। বাড়ি নিয়ে যেতেও আবার গাড়ি ভাড়া লাগবে। সেই টাকা কোথায় পাব? তাই রাস্তার ধরেই বসে পড়েছি ঘর সাজানোর মাটির কারুকার্য নিয়ে। লাভ না হলেও চলবে কেনা দাম পেলেই বর্তে যাই।’’ প্রয়োজনে শহরের পাড়া ঘুরে ওই জিনিস বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছেন তিন বন্ধু।