রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ পাঁচ জনের জামিন নিয়ে ভিন্নমত দেখা দিল হাই কোর্টের দুই বিচারপতির মধ্যে। এক জন সকলের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে অন্য বিচারপতি বিরোধিতা করেন। বিচারপতি অপূর্ব রায় সিংহের বিরোধিতার কারণে এই মামলার রায় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের কাছে গেল। প্রধান বিচারপতি মামলাটি তৃতীয় বেঞ্চে পাঠাবেন। সেখানেই পার্থদের জামিন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। বাকি চার জনকে নিয়ে দুই বিচারপতি একমত হওয়ায়, সিবিআইয়ের মামলায় তাঁরা জামিন পেলেন।
টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার কাজে এজেন্ট বা মিডলম্যান হিসাবে কাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল চার জনের বিরুদ্ধে। তাঁরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন। সেই চার জন হলেন কৌশিক ঘোষ, শেখ আলি ইমাম, সুব্রত সামন্ত রায় এবং চন্দন ওরফে রঞ্জন মণ্ডল। এই চার জনের জামিন নিয়ে একমত দুই বিচারপতিই।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের জামিন নিয়ে ভিন্নমত দুই বিচারপতির। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায় আলাদা মত দেন। তিনি চার জনের জামিন মঞ্জুর করলেও পাঁচ জনের ক্ষেত্রে বিরোধিতা করেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিন্হার জামিন মঞ্জুর করেননি বিচারপতি অপূর্ব সিংহ।
জামিন চেয়ে এর আগে একাধিক বার হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পার্থ। হাই কোর্টের সিঙ্গল এবং ডিভিশন বেঞ্চে খারিজ হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আবেদন। এর আগে ইডির মামলায় জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ। সেই জামিনের বিরোধিতা করে ইডি। গত এপ্রিলের ওই শুনানি শেষে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ পার্থের জামিনের আবেদন খারিজ করেন। পরে সিবিআইয়ের মামলায় জামিন চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ-সহ ন’জন। প্রায় ছ’মাস ধরে ওই জামিন মামলাগুলির শুনানি চলে হাই কোর্টে। পুজোর আগেই শেষ নয় শুনানি। বুধবার সেই মামলায় রায় ঘোষণা।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার আগে তাঁর নাকতলার বাড়িতে চলেছিল দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। ‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও একই সময়ে হানা দিয়েছিল ইডি। পরে তাঁকেও গ্রেফতার করে ইডি। তল্লাশিতে টালিগঞ্জের একটি আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ বহু কোটি টাকা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। পরে অর্পিতার আরও একটি ফ্ল্যাট থেকে বিপুল নগদ উদ্ধার হয়। বর্তমানে জেলবন্দি পার্থ-অর্পিতা।