জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। —ফাইল চিত্র ।
সোমবার সন্ধ্যাবেলা রাজভবনে যান জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা। কথা বলেন রাজ্যপালের সঙ্গে। সেখান থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবি করেন তিনি।
রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সওয়াল করলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘দিনের পর দিন মহিলাদের উপর নির্যাতন হয়েছে। ১৮টা অভিযোগ পেয়েছি। দু’জন ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছে। পুলিশের উপর মানুষের আস্থা নেই। আমাকে ধরে গ্রামের মহিলারা কাঁদছেন। রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’
এর আগে জাতীয় তফসিলি কমিশনও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি জারি করার সুপারিশ করে।শুক্রবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে ওই সুপারিশ করেন জাতীয় তফসিলি কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি গিয়েছিল জাতীয় তফসিলি কমিশনের প্রতিনিধি দল। সেখানে ওই প্রতিনিধি দলকে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন অরুণ। সেখান থেকে ফিরে শুক্রবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ এবং অন্য প্রতিনিধিরা। সেখানেই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার সুপারিশ জানানো হয়।
সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে কথা বলার পর টোটোয় চেপে গ্রাম থেকে সন্দেশখালি থানায় ঢুকলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। তাঁর সঙ্গে থানার ভিতরে গিয়েছেন সন্দেশখালির চার মহিলা। থানায় ঢুকে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছেন রেখা।
জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন থানায় ঢুকেছেন খবর পেয়ে অভিযোগ জানাতে থানার বাইরে ভিড় জমান গ্রামবাসীরা। তবে তাঁদের থানার গেটের সামনে আটকে দিয়েছে সন্দেশখালি থানার পুলিশ।
পুলিশের বিরুদ্ধে জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে অভিযোগ জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, সন্দেশখালির যে মহিলা নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন, তাঁর পরিচয় ফাঁস করেছে পুলিশ।
রেখা শর্মার সন্দেশখালি যাত্রার মধ্যেই তোপ দাগলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন কলকাতা এসে সন্দেশখালির পর চোপড়া যাবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের নারী, শিশু এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী।
চোপড়ার চেতনাগাছে বিএসএফ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গত সোমবার মাটি চাপা পড়ে চার শিশুর মৃত্যু হয়। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দাসপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চেতনাগাছ এলাকায় বিএসএফ একটি নর্দমা কাটছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। সেখানেই খেলা করছিল শিশুরা। আচমকাই ধস নেমে দুর্ঘটনা ঘটে। মাটির নীচে চাপা পড়ে চার শিশু। বিএসএফ জওয়ানেরা তাঁদের উদ্ধার করে চোপড়ার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সেখানেই চার শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এ নিয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে তৃণমূল। সেই ঘটনা খতিয়ে দেখতে রেখা চোপড়া যাবেন কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন শশী।
শশী বলেন, ‘‘অমিত মালবীয়র নেতৃত্বে থাকা বিজেপির আইটি সেল আমাদের মা সারদাকে নিয়ে নিন্দনীয় এবং অবমাননাকর ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট করেছে। যে হেতু রেখাজি আপনি এখন কলকাতায় আছেন, তাই আপনার বিষয়টি জানা উচিত এবং বিবেচনা করে সমস্যাগুলির সমাধান করা উচিত।’’
সন্দেশখালি পৌঁছে এক ‘নির্যাতিতা’র বাড়িতে ঢুকলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। ওই মহিলা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন রেখা।
সন্দেশখালি পৌঁছলেন রেখা শর্মা। এলাকায় ঘুরে ঘুরে গ্রামের মহিলাদের থেকে বিভিন্ন অভিযোগ শুনছে জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিদল। সন্দেশখালি পৌঁছে রেখা বলেন, ‘‘সকলের মধ্যে থেকে ভয় দূর করতে হবে। ভয়ের আগে জয় রয়েছে। এক জন ভয় কাটিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযুক্ত গ্রেফতার হলে বাকিদেরও ভয় কাটবে। আরও মহিলা সামনে আসবেন।’’
ফেব্রুয়ারির শুরুতে দফায় দফায় অশান্তির ঘটনা ঘটে সন্দেশখালিতে। গ্রামের একাংশ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সামনের সারিতে ছিলেন মূলত মহিলারা। সেই সময়েই স্থানীয় মহিলাদের একাংশ দাবি করেছিলেন, দিনের পর দিন তাঁদের উপর যৌন নির্যাতন হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে সন্দেশখালি যান জাতীয় মহিলা কমিশনের দুই প্রতিনিধি। সন্দেশখালির হালদারপাড়া, পুকুরপাড়া ও লস্করপাড়ার মহিলাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় মহিলা কমিশনের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের পোস্টে বলা হয়, সন্দেশখালি থেকে যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে মহিলাদের উপর অত্যাচারের একটি ভয়ঙ্কর প্রবণতা প্রকাশ্যে এসেছে। নির্যাতিতাদের যাতে দ্রুত নিরাপত্তা দেওয়া হয়, তার দাবিও জানায় জাতীয় মহিলা কমিশন। কমিশনের কথায়, ‘‘সন্দেশখালি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা অনেক কিছু বলে দিচ্ছে। কমিশন এ ব্যাপারে আরও গভীরে যেতে চায়। কমিশন পূর্ণ তদন্ত এবং দোষীদের কড়া শাস্তি চায়।’’ ১৬ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার সন্দেশখালি নিয়ে সমাজমাধ্যমে সরব হন রেখা। তিনি লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালিতে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিকে জাতীয় মহিলা কমিশন ধিক্কার জানায়। যৌন হেনস্থার জন্য পুলিশ এবং তৃণমূল সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।’’ রেখা এও জানান, জাতীয় মহিলা কমিশনের রিপোর্টে পুলিশের দিকেও আঙুল তোলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবারই জাতীয় মহিলা কমিশন জানিয়েছিল পরের সপ্তাহে আবার সন্দেশখালিতে যাওয়ার কথা। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকের সঙ্গেও তারা কথা বলতে চায় বলে জানিয়েছিল। সেই মতো সোমবার সন্দেশখালি যাচ্ছে জাতীয় মহিলা কমিশনের দল।
গত মঙ্গলবার সন্দেশখালি গিয়েছিল রাজ্যের মহিলা কমিশন। স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যের কমিশনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছিলেন, এমন কোনও মহিলাকে পাওয়া যায়নি, যিনি প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। এর পরেই সন্দেশখালিতে যে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল, তা নিয়ে তদন্ত করতে রাজ্য পুলিশের তরফে ১০ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়। গত মঙ্গলবার দলটি সন্দেশখালি গিয়েছিল। তাদের তরফে জানানো হয়, দিনভর গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রাথমিক ভাবে ‘ধর্ষিতা’ কারও দেখা পাননি পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যেরা। সোমবার ফের সন্দেশখালিতে যাচ্ছে জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি দল। নেতৃত্বে থাকছেন চেয়ারপার্সন রেখা।
কলকাতা পৌঁছলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। কলকাতার বিমানবন্দর থেকে সোজা সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা হলেন তিনি। সূত্রের খবর, আগের সপ্তাহে জাতীয় মহিলা কমিশনের যে প্রতিনিধি দল সন্দেশখালি গিয়েছিল, তার সদস্যেরা সকলেই থাকছেন রেখার সঙ্গে।