তৃণমূল কর্মীদের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।
ভোটগণনার রাতে আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাঙড়। আইএসএফ এবং পুলিশের সংঘর্ষে গুরুতর জখম দুই পক্ষের বেশ কয়েক জন।
বালুরঘাট ব্লকের গণনাকেন্দ্র বালুরঘাট কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। গণনাকেন্দ্রের ভিতরে বিজেপি প্রার্থীদের হারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, অভিযোগ পেয়ে তিনি সেখানে পৌঁছেছেন। সুকান্তের অভিযোগ, মহিলা তৃণমূলের সভাপতি স্নেহলতা হেমব্রম পরাজিত হওয়ার পরেও গণনাকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করেছেন। এই নিয়ে বিডিওর সঙ্গে কথা বলার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফলের নিরিখে নিজের বিধানসভা নন্দীগ্রামে কিছুটা এগিয়ে রইলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লক মিলিয়ে মোট ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সরকারি ভাবে ১৭টি পঞ্চায়েতের ফলাফল স্পষ্ট হয়নি। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, তৃণমূলের থেকে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। একটি সূত্রের খবর, ১৭টির মধ্যে ১০টি পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি, ছ’টি তৃণমূল এবং একটি ত্রিশঙ্কু।
পঞ্চায়েতের ভোট গণনা চলাকালীন টুইটারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখলেন, ‘‘নো ভোট টু মমতা’কে ‘নাও ভোট ফর মমতা’য় পরিণত করার জন্য মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ।’’ পাশাপাশি, বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে একসূত্রে গেঁথে কটাক্ষ করেছেন তিনি। অভিষেকের টুইটে রয়েছে আগামী লোকসভার ক্ষেত্র প্রস্তুতির প্রসঙ্গও।
বগটুইয়ের পীড়িতদের পরিবারের দুই বিজেপির প্রার্থী পরাজিত হল তৃণমূলের কাছ। রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির পদে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন নিহত ডলি বিবির বৌমা সীমা খাতুন। বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বগটুই গ্রামের প্রার্থী হয়েছিলেন মিহিলাল শেখের দিদি মেরিনা বিবি। তাঁরা দু’জনেই তৃণমূলের প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন।
বাঁকুড়া জেলায় ১৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৫২টি তৃণমূলের দখলে। ১০ টি বিজেপি দখল করল।
সিপিএমের প্রার্থী এবং এজেন্টদের মারধর করে গণনাকেন্দ্র থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ে। প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ বাম কর্মী-সমর্থকদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে সোনারপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ৷ মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
সোনারপুরে সিপিএমের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের দুনিগ্রামে কংগ্রেস কর্মীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
কংগ্রেস কর্মীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লকের ১১ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮৭টি আসনের ১৮৭টি আসনেই তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
দক্ষিণ দিনাজপুরে জেলাশাসকের দফরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই প্রার্থী মুক্তি মার্ডি ও স্বপ্না পাহানকে প্রথমে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে তাঁরা পরাজিত হয়েছেন বলে জানানো হয়। গণনায় কারচুপি হচ্ছে, এই অভিযোগে জেলাশাসকের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন সুকান্ত।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএম প্রার্থীদের মারধর করে গণনাকেন্দ্র থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল হাওড়ার সাঁকরাইলে। বাইরে বেরিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন প্রার্থীরা। ঘটনাটি হাওড়া সাঁকরাইলের। গণনাকেন্দ্রের ভিতরে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছে বিজেপি।
সাঁকরাইলে গণনাকেন্দ্রে ভাঙচুরের অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
চার ভোটে জিতেছিলেন সিপিএম প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ মজুমদার। সেই সময়ই ব্যালট কাগজ খেয়ে ফেললেন তৃণমূল প্রার্থী মহাদেব মাটি। মঙ্গলবার এমন কাণ্ডই ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের ভুরকুন্ডা পঞ্চায়েতের ৩১ নম্বর বুথে।
তিন আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডি কাটিয়ে তৃণমূলে ফেরানো হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল বিজেপি। যা ঘিরে সরগরম হয় রাজ্য রাজনীতি। দণ্ডিকাণ্ডে সেই তিন জনের মধ্যে শিউলি মার্ডিকে প্রার্থী করেছিল ঘাসফুল শিবির। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের গোফানগর পঞ্চায়েতের ৭১ নম্বর চক বলরাম আসন থেকে জিতেছেন সেই শিউলি। ১০৫ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন তিনি।
শিউলি মার্ডি (বাঁ দিকে)। দণ্ডি কাটার ছবি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমে বরশাল গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২টি আসন। তৃণমূল পেয়েছে ১১টি। বিজেপি পেয়েছে ৮টি, সিপিএম পেয়েছে তিনটি আসন। বরশাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বগটুইয়ে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন। ২টি তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। বাকি দু’টি আসনও শাসকদলের দখলে। ২০২২ সালের ২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে বোমার আঘাতে খুন হন বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেই খুনের পর রাতে বগটুই গ্রামে বহু বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তার জেরে ১০ জনের মৃত্যু হয়।
পঞ্চায়েত সমিতির ভোটগণনার সময় উত্তেজনা ছড়াল পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানিগঞ্জে। রানিগঞ্জ গার্লস কলেজে গণনা চলাকালীন তৃণমূল এবং সিপিএমের মধ্যে বচসা। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। লাঠির ঘায়ে জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন। তৃণমূল নেতা সৌমিত্র বন্দোপাধ্যায়ের মাথা ফেটেছে বলে দাবি।
বীরভূমের নানুর থেকে জেলা পরিষদে প্রথম বার প্রার্থী হয়ে জয়ী হলেন নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখ।। ৪৪ হাজারেরও বেশি ভোটে জেলা পরিষদে আসনে তিনি জয়ী হয়েছেন।
জয়ী কাজল শেখ। —নিজস্ব চিত্র।
ভাইকে হারিয়ে জিতলেন দাদা। কিন্তু গণনাকেন্দ্রে কেঁদে ফেললেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ১ ব্লকের ১ গ্রাম পঞ্চায়েত রসুলপুর বুথের ঘটনা। রসুলপুর বুথে তৃণমূলের প্রার্থী খোকন খান। খোকনের বিরুদ্ধে সিপিএমের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন তাঁর ভাই শাহরুখ খান। যদিও এই কান্না আনন্দাশ্রু বলে মন্তব্য খোকনের।
ভাইকে হারালেন দাদা। —নিজস্ব চিত্র।
পরাজয় দেখে গণনাকেন্দ্র থেকে দুই বান্ডিল ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে পালাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেন তৃণমূল প্রার্থী রূপসোনা মল্লিক। তিনি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের পাঁচরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯ নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর কাছ থেকে দুই বান্ডিল ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে। ওই তৃণমূল প্রার্থীকে আটক করে জামালপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও ওই বুথে সিপিএমের প্রার্থী লক্ষ্মী মাল পরাজিত হন। তৃণমূল প্রার্থী রূপসোনা পান ৪৬৪ ভোট। অন্য দিকে, সিপিএমের প্রার্থী লক্ষ্মী পান ৩৭৩টি ভোট। জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট গণনা চলাকালীন হেরে যাবেন এই আশঙ্কা থেকেই ব্যালট পেপার ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি, এমনই অভিযোগ উঠেছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেন তৃণমূল প্রার্থী। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হলেন সাংসদ-অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীর ছোট মামি পুনম চক্রবর্তী। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরাতন পাণ্ডা পাড়ার ১৭/১৫৫ নম্বর বুথ থেকে এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে একই পরিবারের তিন বউয়ের লড়াই আলোচিত হয়েছে। তাঁরা সকলেই মিমির মামি। শেষে জিতলেন তৃণমূলের পুনম।
জয়ী পুনম চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের দক্ষিণ গাজিপুরে তৃণমূলের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল আইএসএফ এবং জমি রক্ষা কমিটির বিরুদ্ধে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ারও অভিযোগ উঠেছে। চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর। —নিজস্ব চিত্র।