রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল বলেন, ‘‘বাংলায় এই ধরণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। টাকা, রাজনীতি, সরকারের শক্তি মিলে এসব করানো হচ্ছে। রাজ্যবাসীর অধিকার যাতে অক্ষুন্ন থাকে তার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের, পুলিশ মন্ত্রীর। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে বাংলায় হিংসা খুনোখুনি হয়ে আসছে। এটা চলতে পারে না। রাজ্য সরকারকে এসবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা উচিৎ। কিন্তু আমি দেখছি উল্টে সরকারই এসবকে টাকা দিয়ে প্রশ্রয় দিচ্ছে, আরও হিংসা ছড়াতে উদ্যোগ নিচ্ছে। বাংলায় একটি কুৎসিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটা এখনই আর এখানেই শেষ করতে হবে। আমি সিদ্ধান্তে পৌছেছি যে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতাতেই এসব ঘটনা ঘটছে। আর এই সমস্যাকে সঠিকভাবে সমাধান করা হবে।’’
শিলিগুড়ি থেকেই আবার দিল্লির উদ্দেশে রওনা হলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নির্যাতিতদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন না চোপড়ায়। রাজভবনসূত্রে খবর, চোপড়া সফর হঠাৎই বাতিল করেছেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপাল বললেন, যে সমাজ মহিলাদের রক্ষা করতে পারে না, সেই সমাজ সভ্যসমাজ বলে গণ্য হয় না।
সরকার সমর্থিত হিংসা চলছে রাজ্যে, এই বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের, শিলিগুড়ির সার্কিট হাউসে বসে বললেন রাজ্যপাল।
রবিবার সন্ধ্যাবেলায় চোপড়া থানার পুলিশ গ্রেফতার করে জেসিবিকে। সোমবার তাকে পাঁচ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশ সূত্রে খবর জেসিবির বিরুদ্ধে পাঁচটি ধারায় মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে খুনের চেষ্টা-সহ দু’টি জামিনঅযোগ্য ধারা রয়েছে।
রবিবারই চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে হওয়া একটি ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, এক তরুণ এবং এক তরুণীকে রাস্তায় ফেলে একছড়া কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন এক ব্যক্তি। মার খেতে খেতে বিশ্রস্ত অবস্থায় প্রায় গুটিয়ে যাওয়া তরুণীকে চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে আবার চলছে মার। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই মহিলা বিবাহিত। তবে তিনি এক ব্যক্তির সঙ্গে ঘর ছাড়েন। পরে ফিরে এলে তাঁদের কাছে ১০ হাজার টাকা জরিমানা চাওয়া হয়। এ-ও বলা হয়, টাকা না দিলে এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না। তার পরও সেই টাকা না দেওয়ায় রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় তাঁদের। পরে জানা যায়, ভিডিয়োয় যিনি তাঁদের মারছিলেন, তাঁর নাম তাজিমুল ইসলাম ওরফে জেসিবি। তিনি তৃণমূল নেতা। তবে এলাকায় পরিচিত চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের ঘনিষ্ঠ বলে।
চোপড়াকাণ্ডের খবর পেয়ে সোমবারই দিল্লি থেকে এসে পৌঁছেছিলেন শিলিগুড়িতে। মঙ্গলবার সকালে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শিলিগুড়ি থেকে রওনা হন বাগডোগরার উদ্দেশে। সেখান থেকে সড়কপথে তিনি পৌঁছবেন চোপড়ায়। কথা বলবেন চোপড়াকাণ্ডের আক্রান্ত এবং তাঁদের পরিবারের সঙ্গে।