Comedians

Tollywood Comedians: পদাতিক ঈশ্বর: সেরা ১৪, অভিনব শ্রদ্ধার্ঘ্য

এঁদের মধ্যে অনেকেই চিহ্নিত হয়ে রয়েছেন নিছক ‘কমেডিয়ান’ হিসেবে। কিন্তু তাঁরা কি শুধুই কৌতুকাভিনেতা?

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২১ ১৪:২০
Share:
০১ ১৩

বাংলা চলচ্চিত্রের ‘স্বর্ণযুগ’। পর্দা কাঁপাচ্ছেন মহারথীরা। রুপোলি পর্দায় দেখা দিচ্ছেন যে সব ছায়াপুরুষ-ছায়া-মানবীরা, তাঁদের নখদর্পণে বিভিন্ন রকম চরিত্রে অভিনয়ের দক্ষতা। এঁদের মধ্যে অনেকেই চিহ্নিত হয়ে রয়েছেন নিছক ‘কমেডিয়ান’ হিসেবে। কিন্তু তাঁরা কি শুধুই কৌতুকাভিনেতা? নাকি তারও বেশি কিছু? অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরূপ মল্লিক, চন্দননগরের দুই তরুণ তাঁদের ডিজিটাল ডিজাইনিং সংস্থার তরফে তৈরি করেছেন ২০২২ সালের এক দিনপঞ্জি। টেবিল ক্যালেন্ডার আঙ্গিকের এই পঞ্জির সমুখ-পাতাতেই দিয়ে রেখেছেন তাঁদের কৈফিয়ৎ।

০২ ১৩

‘বসন্ত বিলাপ’ (১৯৭৩) ছবির সেই বিখ্যাত দৃশ্য। যেখানে চিন্ময় রায় উচ্চারণ করছেন এমন এক সংলাপ, যা প্রবাদ হয়ে যাবে ভবিষ্যতে। দিনেন গুপ্ত পরিচালিত এই ছবিও আজ কিংবদন্তি।

Advertisement
০৩ ১৩

শোনা যায়, তাঁর সঙ্গে এক দৃশ্যে অভিনয় করতে গেলে একটু থমকাতেন জ্যেষ্ঠভ্রাতা মহানায়কও। তরুণকুমার কি নিছক কৌতুকাভিনেতা? কে ভুলবে তপন সিংহ পরিচালিত ‘ঝিন্দের বন্দী’ (১৯৬১) ছবিতে তাঁর অভিনীত খলনায়ক উদিত সিং-কে? সঙ্গের ছবিটি সুনীল বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘দেয়া নেয়া’ (১৯৬৩) ছবির।

০৪ ১৩

পর্দায় তুলসী চক্রবর্তীকে দেখলে নড়েচড়ে বসতেন আপামর দর্শক। বেধড়ক ‘গোমড়াথেরিয়াম’দের ঠোঁটের কোণও উসখুসিয়ে উঠত। কিন্তু এই মানুষটিই সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’-র প্রসন্ন গুরুমশায়, ‘পরশ পাথর’-এর পরেশবাবু। কমেডিকে ছাপিয়ে যেতেন তিনি। আর ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ তো আজ ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করছে। সঙ্গের ছবিটি সেই চলচ্চিত্রেরই। ১৯৫৩ সালের সেই ছবির পরিচালক ছিলেন নির্মল দে।

০৫ ১৩

পর্দায় তিনিই প্রথম ‘রানি রাসমণি’। বাংলা ভক্তিমূলক ছবিতে এক সময়ে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন মলিনা দেবী। তবে কৌতুক সৃজন কাকে বলে, তা-ও দেখিয়ে দিয়েছিলেন ‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এ। সঙ্গের ছবিটি সেই চলচ্চিত্রের।

০৬ ১৩

নৃপতি চট্টোপাধ্যায় আর হরিধন মুখোপাধ্যায়। কমেডি-কৃত্যে কে যে কাকে টক্কর দিয়ে বসবেন, বলা মুশকিল ছিল। নৃপতির উদ্ভট অঙ্গভঙ্গীতেই তৈরি হত মজা। হলিউডের স্ল্যাপস্টিক কমেডির এক নির্মল ঝলক যেন খেলে যেত টালিগঞ্জে। অথচ এই হরিধনই দর্শকের চোখে জল এনেছিলেন তরুণ মজুমদারের ‘ফুলেশ্বরী’-তে (১৯৭৪)। সঙ্গের ছবিটি অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ধন্যি মেয়ে’ (১৯৭১) ছবির।

০৭ ১৩

সারা জীবন ‘কমেডিয়ান’ তকমার বোঝা বইতে হয়েছে অনুপকুমারকেও। কিন্তু তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় ‘পলাতক’ (১৯৬৩) বা ‘ঠগিনী’ (১৯৭৪)-তে তাঁর অভিনয় মোটেই সেই ছকের মধ্যে পড়ে না। ‘জীবনপুরের পথিক’ বাংলা সিনেমায় অনন্য স্থান অধিকার করে আছেন। সঙ্গের ছবিটি ‘পলাতক’-এর।

০৮ ১৩

বিচিত্র কণ্ঠে বলে ওঠা— “বাবু, আমি চাকর মনিষ্যি।” আর তাতেই দর্শক মাৎ। নবদ্বীপ হালদার শুধু পর্দাতেই নয়, গ্রামোফোন রেকর্ডেও আসর মাতিয়েছেন এক কালে। তাঁর বহুবিধ কণ্ঠে গাওয়া কৌতুকগীতি ‘আর খেতে পারিনে বাপু প্যান্তাফ্যাচাং তরকারি’ মধ্যবিত্ত বাঙালির দিনযাপনে আজও নির্মম সত্য। সঙ্গের ছবিটি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবির।

০৯ ১৩

‘সাড়ে চুয়াত্তর’ যে উত্তম-সুচিত্রা ছবির জুটি, সেই কথাটি মনে থাকে না দেখতে বসলে। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের “মাসিমা মালপো খামু”-কে কোন ব্যাকরণে বাঁধা যায়? আজীবন কমেডিয়ানের তকমা গায়ে এঁটেও ভানুর অভিনয় তালিকায় রয়েছে ১৯৫৯ সালে নির্মল দে-র পরিচালনায় ‘নির্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতিতে’-র মতো ব্যতিক্রমী ছবিও। সঙ্গের ছবির উদ্ধৃতিটি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এর, কিন্তু ভানুর অবয়ব ‘ওরা থাকে ওধারে’ (১৯৫৪) থেকে নেওয়া।

১০ ১৩

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই উচ্চারিত হত তাঁর নাম। জহর রায়। ভানু-জহর জুটি যেন বাঙালির নিজস্ব ‘লরেল-হার্ডি’। কিন্তু সেই জহর রায়ই যখন সত্যজিতের ক্যামেরায় হাল্লা রাজার কুচক্রী মন্ত্রী, তখন ভাবা প্র্যাকটিস করতে হয় তাঁর অভিনয় প্রতিভা নিয়ে। সঙ্গের ছবিটি ‘পলাতক’-এর।

১১ ১৩

সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে কৌতুকাভিনেত্রী হিসেবে অস্বীকার করা যাবে না। তবু বাংলা ছবির সেই আলোকোজ্জ্বল জমানায় তিনি অন্যতমা নায়িকা হয়েও একের পর এক প্রথাভাঙা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে ‘পাশের বাড়ি’ (১৯৫২) বা ‘মৌচাক’ (১৯৭৪)-কে ভোলা অসম্ভব। সঙ্গের ছবিটি ‘ধন্যি মেয়ে’ ছবির।

১২ ১৩

১৯৬৯ সালের মে মাসে বাঙালি এমন এক ছবি দেখেছিল, যার স্বাদ সে আগে কখনও পায়নি। সত্যজিৎ রায়ের ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-কে কি শুধু ‘কমেডি-ফ্যান্টাসি’ বলে দেগে দেওয়া যায়! নাকি রবি ঘোষ আর তপেন চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়কে বেঁধে ফেলা যায় ‘কৌতুক’-এর সীমানায়! ‘রাজার জামাই’দের কাণ্ডকারখানায় আজও যে মজে বাংলার খুদে থেকে সলমন রুশদির মতো দুঁদে সাহিত্যিক!

১৩ ১৩

রহস্য-রোমাঞ্চ ঔপন্যাসিক লালমোহন গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে ‘জটায়ু’-র চরিত্রে অনেক অভিনেতাই এসেছেন। কিন্তু সন্তোষ দত্তের জায়গা কেউই নিতে পারেননি। এ কথা ফেলুদা-পাগলরা নির্দ্বিধায় স্বীকার করেন। সত্যজিৎ রায়ের এই ‘আবিষ্কার’ যখনই পর্দায় এসেছেন, যে ভূমিকাতেই এসেছেন, দর্শকের সম্পূর্ণ মনোযোগ একাই আকর্ষণ করে নিয়েছেন। ‘সোনার কেল্লা’ (১৯৭৪) বা ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’, উটের পিঠে অভিযান বা মগনলাল মেঘরাজের ডেরায় ছুরি ছোড়ার খেলার দৃশ্যে তিনি ‘কৌতুক’ নামের রসটিকে টপকে চলে গিয়েছেন বহু দূর। সঙ্গের ছবিটি ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement