Jagdeep dhakhar

TMC vs Jagdeep Dhankhar: বিধানসভায় এসে মমতাকে শপথের প্রস্তাব পাঠালেন পার্থ, রাজ্যপাল দেখালেন সংবিধান

আগামী বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এসে বিধায়ক মমতা-সহ আরও দুই বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানোর আবেদন জানানো হয়েছে রাজ্যপালকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২১ ২০:১৮
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে ফের সংঘাত রাজ্য সরকারের। নিজস্ব চিত্র।

ভবানীপুর উপনির্বাচনে রবিবার জয় পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সোমবার দিনভর বিধানসভা ও রাজভবনের মধ্যে টানাপড়েন চলল তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে। সূত্রের খবর, বিধানসভা থেকে রাজভবনে প্রস্তাব আকারে একটি চিঠি পাঠানো হয়।যেখানে আগামী বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এসে বিধায়ক মমতা-সহ আরও দুই বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানোর আবেদন জানানো হয়েছে রাজ্যপালকে। সন্ধ্যায় পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাব পাঠানোর এই কথা জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে। পার্থ বলেন, ‘‘আমি আর কোনও বিতর্কের মধ্যে যাচ্ছি না। আমরা রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছি, বিধানসভার গরিমা অনুযায়ী, রীতিনীতি অনুযায়ী আসুন। কাউকে ছোট করা নয়, আগামী ৭ তারিখ দুপুর ১২টার আগে আমরা চাইছি, বিধানসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রীকে শপথবাক্য পাঠ করান।’’ এমন চিঠি পাওয়ার পরেই পাল্টা জবাব দিল রাজভবনও। টুইট করে স্পিকার-সহ রাজ্য সরকারকে সংবিধান দেখালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হল, নির্বাচন জয়ের পর বিজ্ঞপ্তি জারি করে তা জানানো হোক। তার পরে সে সম্পর্কে রাজ্যপালকে অবগত করানো হলে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তিনি।

গত সপ্তাহ থেকেই এ বিষয়ে টানাপড়েন শুরু হয়। বিধানসভা সূত্রে জানা গিয়েছিল, গত সপ্তাহেই রাজভবন থেকে একটি বার্তা এসেছিল বিধানসভার সচিবালয়ে। সেই বার্তায় বলা হয়েছিল, এর পর থেকে নির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবিধানিক ভাবে লোকসভার ক্ষেত্রে সাংসদদের শপথগ্রহণ করানোর দায়িত্ব দেশের রাষ্ট্রপতির। রাজ্য বিধানসভার ক্ষেত্রে সেই দায়িত্ব রাজ্যপালের। কিন্তু, প্রায় সব ক্ষেত্রেই সাংসদ, বিধায়কদের শপথগ্রহণের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল দিয়ে থাকেন তাঁর মনোনীত ব্যক্তিকে। তাই লোকসভা বা বিধানসভার সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হলে সাধারণত সাংসদ-বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করান প্রোটেম স্পিকার। স্পিকার নির্বাচন হয়ে গেলে, লোকসভার ক্ষেত্রে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় স্পিকারকে। বিধানসভার ক্ষেত্রে রাজ্যপাল সেই দায়িত্ব দেন সংশ্লিষ্ট বিধানসভার স্পিকারকে। এ ক্ষেত্রে স্পিকারদের সেই ক্ষমতা দেন রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যপালের দেওয়া সেই ক্ষমতা এ বার প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।


Advertisement

রাজভবন থেকে বিধানসভায় পাঠানো বার্তায় জানানো হয়েছে, সংবিধানের ১৮৮ ধারা অনুযায়ী শপথগ্রহণ নিয়ে রাজ্যপাল এত দিন যে অধিকার স্পিকারকে দিয়েছিলেন, তা ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে, দশকের পর দশক ধরেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালরা এই দায়িত্ব স্পিকারকে দিয়ে রেখেছিলেন। সেই অধিকারই আইন বলে ফিরিয়ে নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে নিজে বিধায়ক পদে শপথবাক্য পাঠ করাতে চান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিস্তর আপত্তি রয়েছে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। উভয়েই ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে দিয়েছেন, রাজভবনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হলে তাঁরা যাবেন না।

শপথগ্রহণ নিয়ে জটিলতা কাটাতে সোমবার দুপুরে বিধানসভায় বৈঠকে বসেন বিমান-পার্থ।পরে সেই বৈঠকে যোগ দেন তৃণমূল পরিষদীয় দলের উপমুখ্যসচেতক তাপস রায় ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। সূত্রের খবর, জটিলতা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেছেন স্পিকার ও পরিষদীয়মন্ত্রীর সঙ্গে। মনে করা হচ্ছে, তাতেই নিজেদের অনড় অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছেন বিমান-পার্থ। তাই শপথগ্রহণের বিষয়টি আপাতত রাজ্যপালের হাতে ছেড়ে দিলেও বিধানসভাতেই মমতার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হোক, এমনটাই চান রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রীরা।

আরও পড়ুন:

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement