ছবি ফেসবুক
বিজেপি-কে ‘কাপালিক শক্তি’ বলে বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের মমতার মিছিলে হাঁটার অনুরোধ জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায়। যদিও সেই প্রস্তাব ‘সযত্নে ফেরত’ পাঠাল বাম-কংগ্রেস জোট। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একজোট হয়েছে বাম-কংগ্রেস। বাংলার ক্ষমতা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরানোই তাদের প্রধান লক্ষ্য। যদিও তাদের লড়াই কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপি-র নীতির বিরুদ্ধেও।
বর্ষীয়ান রাজনীতিক তাপস সোমবার বলেন, ‘‘দেশে এই কাপালিক শক্তির উত্থান হয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতায়। দেশে বাম শক্তিও ক্রমক্ষয়িষ্ণু। এই মুহূর্তে বিজেপি-কে কে রুখতে পারে, তাঁর নাম দেশে সবাই জানে। তাই আমি বাম ও কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের বলব, তাঁরা যেন বিজেপিকে আটকাতে মমতার সঙ্গে মিছিলে পা মেলান।’’ সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘যদি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের কর্মীরা বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মমতা হাত শক্ত করতে এগিয়ে আসেন, তা হলে তাদের সেই মিছিলেও আমি সমর্থন দিতে পারি।’’
তাপসের এমন প্রস্তাব প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, এ বারের নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে আব্বাস সিদ্দিকির ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’। আব্বাসের সভায় যে ভাবে সংখ্যালঘু জনতার ঢল নামছে, তাতে চিন্তিত শাসকদল। কারণ নীল বাড়ি দখলে রাখতে মমতার বড় ভরসা সংখ্যালঘু ভোট। তৃণমূল নেতৃত্বের ধারনা আব্বাস জোটের সঙ্গে এলে তাঁদের সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসবে। তাই ভোটের আগেই পরিষদীয় মন্ত্রী তাপসের মতো নেতারা কৌশলগত কারণেই বাম-কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকদের মনে ধন্দ্ব তৈরি করতে চাইছেন।
বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়কের প্রস্তাব খারিজ করে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘তাপসবাবু বলেছেন বাম-কংগ্রেস ঠিক ভাবে লড়াই করলে তৃণমূল কর্মীরাও আমাদের মিছিলে হাঁটতে রাজি আছেন। আমরা বুঝলাম না হঠাৎ কেন তিনি এ কথা বলতে গেলেন। কারণ, ওঁদের কথাতেই দিন কয়েক আগে পর্যন্ত বাম-কংগ্রেসকে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার পর একদিন মুখ্যমন্ত্রীকে, এক দিন প্রধানমন্ত্রীকে প্রতি মিনিটে বলতে হচ্ছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের জোটের কথা। আসলে ওরা দু’পক্ষই হেরে গিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘তাপসবাবুর কথার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার কোনও অর্থ হয় না। কারণ তৃণমূলের একটাই পোস্ট, বাকিগুলো ল্যাম্প পোস্ট। তাই পোস্ট যিনি, তিনি কিছু না বললে, কোথায় কে কী সুরে বলল না বেসুরে বলল, তাতে কিছু এসে যায় না।’’