পথে-প্রতিবাদ: আনিস-কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে বাম ছাত্র সংগঠনগুলির মিছিল। বুধবার কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
ছাত্র-নেতা আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য পুলিশের তদন্তের গতি ধীর, এই অভিযাAগে ফের রাস্তায় নামল বাম যুব ও ছাত্রেরা। হাওড়ার আমতায় ওই ঘটনার পর থেকেই লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে চলেছে তারা। মুখ্যমন্ত্রীর গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) রিপোর্ট ১৫ দিন পরেও জমা পড়েনি এবং প্রকৃত অপরাধীরা এখনও ধরা পড়েনি, এই অভিযোগে এ বার কলেজ স্ট্রিট থেকে মৌলালি পর্যন্ত মিছিল হল চার বাম দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের ডাকে।
আনিস-কাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীরা ধরা না পড়লে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বুধবারের বাম ছাত্র ও যুব মিছিল থেকে। ‘নো ওয়ান কিল্ড আনিস খান’— এই আওয়াজ তুলে এ দিনের মিছিলে ছিলেন এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, রাজ্য সভাপতি প্রতীক-উর রহমান, ডিওয়াইএফআইয়ের কলতান দাশগুপ্তেরা। সৃজনের মন্তব্য, ‘‘সিটের তদন্তের নামে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে, তৃণমূলের বিধায়ক শওকত মোল্লা কী করে জেনে গেলেন, আনিস পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিল? আমরা প্রতিবাদ করছি, মার খাচ্ছি, জেলে যাচ্ছি, আবার রাস্তায় নামছি। অপরাধীরা শাস্তি না পেলে আরও বড় আন্দোলন হবে।’’ বিচার বিভাগীয় নজরদারিতে তদন্তের দাবিই ফের তুলেছেন তাঁরা। বাম মিছিলের জেরে এ দিন বিকেলে মধ্য কলকাতার কিছু এলাকায় কিছুক্ষণের জন্য যানজট হয়ে যায়।
শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা বারেবারেই আবেদন জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস এবং তাঁর ঘোষিত তদন্তে আস্থা রাখতে। সেই সূত্রেই সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কী ভাবে এই তদন্তের উপরে আস্থা রাখা যাবে? ধৃত পুলিশকর্মীরা ওসি-র নির্দেশের কথা বললেন অথচ তাঁকে গ্রেফতার করা হল না। পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না। অপরাধী ধরা নয়, নবান্নের নির্দেশে অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে!’’
সিটের তদন্তের গতি নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। বহরমপুরে এ দিন তাঁর কটাক্ষ, ‘‘দিদি যত ক্ষণ বলবে ‘সিট’, তত ক্ষণ ওরা বসে থাকবে! যখন ‘গেট আপ’ বলবেন, তখন উঠবে। দিদি বসে থাকতে বলেছেন, তাই ওরা বসে আছে!” আনিস-কাণ্ডে বিচার বিভাগের নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত এবং বর্ধমানে তুহিনা খাতুনের আত্মহত্যার জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবিতে কলকাতায় ধর্না-অবস্থানের পরিকল্পনাও নিচ্ছে কংগ্রেস।