মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
জনপ্রতিনিধিদের দলত্যাগের প্রশ্নে শাসক দল ‘দ্বিচারিতা’ করছে বলে অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ বার চিঠি পাঠাল সিপিএমের পরিষদীয় দল।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে দলত্যাগ-বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু রাজ্যে যে বিধায়কেরা বিরোধী দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া এগোয়নি। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়ার পরে এ বার সভার নেতা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দিষ্ট আইন আছে। নিশ্চয়ই সেই আইনেই ব্যবস্থা হবে।’’
নির্দিষ্ট উদাহরণ হিসেবে তাঁদের চিঠিতে মালদহের গাজলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করেছেন সুজনবাবু। সিপিএমের প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে আসার কয়েক মাসের মধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর বিধায়ক-পদ খারিজের জন্য আবেদন করার পরে প্রায় সাড়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। চিঠিতে সুজনবাবু লিখেছেন, ‘বিচারে বিলম্ব বিচার না দেওয়ারই শামিল’। দীপালি এখন আবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে সোমবার সুজনবাবু বলেন, ‘‘যখন এঁরা তৃণমূলে যাচ্ছিলেন, তখন শাসক পক্ষের উৎসাহ ছিল না ব্যবস্থা নেওয়ার। এখন তৃণমূল ছেড়ে যখন বিজেপিতে যাচ্ছেন, তখন কি আগ্রহ হবে?’’
বাম নেতৃত্বের মতে, রাজ্য বিধানসভায় এত দিন দলত্যাগ ‘প্রশ্রয়’ পেয়েছে। এখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চিঠিও দেওয়া হয়নি শাসক দলের তরফে অথচ সাংসদের ক্ষেত্রে হয়েছে! এতেই ‘দ্বিচারিতা ও অনৈতিকতা’ স্পষ্ট। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানেরও বক্তব্য, ‘‘দলত্যাগ-বিরোধী আইনের দশম তফসিল তো লোকসভার পাশাপাশি বিধানসভাতেও প্রয়োজ্য। যখন কেউ তৃণমূলে যাবেন, তখন তাঁরা উন্নয়নের জোয়ারে যোগ দেবেন আর তৃণমূল ছেড়ে গেলে মীরজাফর হবেন! এটা কী রকম নিয়ম?’’