বিমান বসু। ফাইল চিত্র।
দলের সদ্যসমাপ্ত রাজ্য সম্মেলনে তিনি রাজ্য কমিটি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। আসন্ন পার্টি কংগ্রেসে দলের পলিটবুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি থেকেও তাঁর সরে দাঁড়ানোর কথা। কিন্তু দলের পদ থেকে অবসর নিলেও রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার জন্য সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসুকে অনুরোধ জানালেন শরিক নেতারা। তাঁদের মতে, যে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বামফ্রন্টকে এখন চলতে হচ্ছে, সেখানে বিমানবাবুর অভিজ্ঞতা ও কুশলতার বিকল্প এই মুহূর্তে নেই।
সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন শেষ হওয়ার পরেই আজ, শনিবার বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকের খবর দিতে দোলের দিন শরিক নেতাদের ফোন করেছিলেন বিমানবাবুই। সূত্রের খবর, একাধিক শরিক নেতা সেই অবসরে বিমানবাবুকে বলেন, বয়স হয়েছে বলে তিনি ফ্রন্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে, তাঁরা কেউই এমন চান না। বহু বিষয়েই ফ্রন্টের অন্দরে সিপিএমের সঙ্গে শরিকদের মতের ফারাক থাকে। সেই ধরনের পরিস্থিতিতে বিমানবাবু যে ভাবে সব পক্ষের মধ্যে সমন্বয় করে চলেছেন, সেই ভূমিকা পালন করার মতো অন্য কাউকে এখন ভাবা যাচ্ছে না বলে শরিক নেতাদের মত। এক শরিক নেতার কথায়, ‘‘মতপার্থক্য অনেক ক্ষেত্রেই হয়েছে। কিন্তু বামফ্রন্টে বিমানদা অভিভাবকের মতো। তিনি নিজে থেকে অন্য কাউকে এই দায়িত্বের জন্য তৈরি করে গেলে সেটাই ঠিক পদ্ধতি হবে। হঠাৎ করে সরে গেলে বামফ্রন্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা আসবে!’’
বয়স-নীতি মেনে যাঁরা পদ বা কমিটি সরে গেলেন, তাঁদের মধ্যে সুস্থ বা সক্রিয়দের ক্ষেত্রে দলের কী পরিকল্পনা? এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও বলেছেন, ‘‘দলের কেন্দ্রীয় থেকে জেলা কমিটি পর্যন্ত এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাঁরা অব্যাহতি নিলেন, তাঁরা কমিটি থেকে সরে গিয়েছেন, পার্টি থেকে নয়। বিমানদা, সূর্যদা’র মতো নেতাদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা অবশ্যই দলের কাজে লাগানো হবে। বিমানদা’র মতো নেতারা নানা ভাবে দলের কাজেই থাকবেন।’’
বামফ্রন্টের এ বারের বৈঠক ডাকা হয়েছে আসন্ন উপনির্বাচন ও সাধারণ ধর্মঘট নিয়ে আলোচনার জন্য। আসানসোল লোকসভা ও বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্টের তরফে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম। কংগ্রেস এখনও প্রার্থী দেয়নি। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ চাইছেন, দুই আসনে প্রার্থী না দিয়ে বামেদের সমর্থন করা হোক। তাঁদের মতে, দুই আসনের কোনওটাতেই কংগ্রেসের সাংগঠনিক হাল বিশেষ কিছু নয়। তার চেয়ে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একজোট করার কথা বললে বামেদের সমর্থন করলে তৃণমূল এবং বিজেপি, দু’পক্ষকেই আর একটু ধাক্কা দেওয়া যেতে পারে। প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ভোটের বিভাজন কমে গেলে বিজেপিকে আরও কোণঠাসা করে দেওয়া সম্ভব। এআইসিসি-র শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের একাংশের এই মত জানানো হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এআইসিসি-ই।