—ফাইল চিত্র।
ভোট পরবর্তী অশান্তিতে রাজ্যের নানা এলাকা উত্তপ্ত। তার উপরে নতুন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে ‘কাটমানি’ (বখরা) ফেরত দেওয়ার জন্য শাসক দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। এই পরিস্থিতিতে সরকার পক্ষকে বিধানসভায় চেপে ধরার জন্য কৌশল সাজিয়ে ফেলল বিরোধী কংগ্রেস ও বাম শিবির।
শোকপ্রস্তাব নিয়ে বিধানসভার বর্ধিত বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে শুক্রবার। চার মাস আগে সংক্ষিপ্ত বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপাল যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তার উপরে আলোচনা হবে এখন! এত দিনে রাজ্যের পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে, এই নিয়ে এমনিতেই সরব হবে বিরোধীরা। তার পাশাপাশিই কংগ্রেস ও বাম পরিষদীয় দলের বৈঠকে এ দিন ঠিক হয়েছে, এলাকা দখলের জন্য রাজনৈতিক সংঘর্ষ, বখরা-কাণ্ড এবং ষষ্ঠ পে কমিশনের উপরে আলোচনা চেয়ে ১৮৫ ধারায় বেসরকারি প্রস্তাব আনা হবে। বেসরকারি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার অনুমতি না পেলে কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা মুলতবি প্রস্তাব এবং উল্লেখ-পর্বে সরব হবেন বলে ঠিক হয়েছে। চিকিৎসকদের আন্দোলন আপাতত মিটলেও নানা ধরনের শিক্ষকেরা যে সমস্যায় রয়েছেন, তা-ও বিধানসভায় তুলবে বিরোধীরা।
সরকারের নানা প্রকল্পের নামে বা কাজ করে দেওয়ার বিনিময়ে আদায় করা বখরার টাকা ফেরত দিতে হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শাসক দলের মধ্যে থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, একেবারে শীর্ষ স্তর থেকে বখরা নেওয়ার ‘চেন’ বন্ধ করা হবে কি? বিরোধী নেতারাও একই প্রশ্ন তুলেছেন। নদিয়া জেলার নেতাদের দিয়ে এ দিন তৃণমূল ভবনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আবার পরামর্শ দিয়েছেন, বখরা সংক্রান্ত অভিযোগ থাকলে নবান্নের টোল-ফ্রি নম্বরে জানাতে। আর্থিক অপরাধ সংক্রান্ত শাখা অভিযোগের তদন্ত করবে। এর প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এ দিন বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। যাঁদের সম্পর্কে এই কথা, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন! তাই ঘোষণা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে, এই আশা করব কী ভাবে?’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘টোল-ফ্রি নম্বরে জানিয়ে তো বখরার টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না! টাকা ফেরানোর জন্যও কি নবান্নে আলাদা কাউন্টার খোলা হবে?’’
বিরোধী নেতারা আরও বলছেন, বখরার অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয় দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী এবং অধুনা তৃণমূল নেতা দীপ্তাংশু চৌধুরীকে। রাজনৈতিক নেতাকে এমন দায়িত্ব দেওয়া হলে সেই প্রক্রিয়ার ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সুজনবাবুরা। কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেছেন, ‘‘এত দিন বখরা তুলে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাওয়ার পরে এখন মনে পড়ল? এত দিন কী করছিলেন?’’ কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকে এ দিন ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হক সওয়াল করেছেন বামেদের সঙ্গে অবিলম্বে জোট গড়ে তোলার জন্য। তাঁর দাবি, কোনও ভাবেই যেন তৃণমূলের দিকে না যাওয়া হয়। তাঁকে সমর্থন করেছেন একাধিক বিধায়ক।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।