প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
সিবিআই-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্তের জন্য এগোনোর সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় আছে প্রায় এক বছর ধরে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের অনুমতি মিলছে না। অভিযুক্ত সাংসদ, আমলা এবং ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত তাই ঝুলে রয়েছে। কেন এমন বিলম্ব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী।
বাম ও কংগ্রেসের অভিযোগ, সিবিআইয়ের মতো সংস্থাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ কাজে লাগানো হচ্ছে এবং কেন্দ্রের সুবিধামতো তদন্তের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের (সিভিসি) তথ্য থেকে এমন ৫৮টি অভিযোগের খতিয়ান দিয়েছেন মান্নান ও সুজনবাবু, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক বা বিভাগের সম্মতির অপেক্ষায় তদন্ত থমকে রয়েছে। ওই তালিকায় তৃণমূলের তিন সাংসদ ও রাজ্যের এক মন্ত্রীকে জড়িয়ে একটি অভিযোগও (আরসি ১০ (এ)/২০১৭, এসিবি কলকাতা) রয়েছে, যা নিয়ে তদন্ত সম্পূর্ণ করার সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের দুই বিরোধী নেতার প্রশ্ন, ‘রাজনৈতিক বিবেচনা’ই কি কেন্দ্রীয় দফতরগুলির এই নীরবতার নেপথ্য কারণ?
মান্নান বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি কি তার মানে জল মাপছে যে, কোন দল কতটা লাইনে আসবে? সেটা দেখে নিয়ে তদন্ত চালাবে?’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘সারদা, নারদে অভিযুক্তদের অনেকেরই শাস্তি হয়নি। এটা কি তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়ার ফল? শেষ পর্যন্ত কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের বিচার গণ-আদালতেই হবে।’’ সুজনবাবুর মন্তব্য, ‘‘মোদী যখনই বাংলায় আসেন, তখন ঘোষণা করেন দোষীদের কাউকে ছাড়া হবে না। সব ফাঁকা আওয়াজ! তা হলে তাঁরই সরকার কেন তদন্ত চালানোর অনুমতি দিচ্ছে না?’’
বিজেপি-তৃণমূল বোঝাপড়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায় অবশ্য বলেন, ‘‘তদন্ত কেন হচ্ছে না, প্রধানমন্ত্রীই তার জবাব দিতে পারবেন। তবে বাম জমানায় কংগ্রেসকে তাঁবে নিয়ে সিপিএম নানা কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করত বলেই প্রতিবাদের জন্য তৃণমূলের জন্ম হয়েছিল।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জেলা-সফরে গিয়ে বিজেপির সঙ্গে বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতার অভিযোগ এনেছেন। পঞ্চায়েত, লোকসভার পরে পুরসভার ভোটেও ওই আঁতাঁতের চেষ্টা হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ। যার জবাবে মান্নানের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘আমরা কোনও আসন জিতলে বিজেপি বা আরএসএস জেতায়! আর বিজেপি যেগুলো জেতে, সব নিজেদের জোরে! এই পাগলের প্রলাপের উত্তর হয় না!’’