প্রতীকী ছবি।
আগামী বিধানসভা ভোটে যাওয়ার আগে যৌথ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে কোনও অভিন্ন মঞ্চ বা কমিটি গড়ে তোলা যায় কি না, সেই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস শিবিরে। দু’পক্ষের শীর্ষ নেতৃত্বের আলোচনায় বসার কথা কাল, বুধবার সন্ধ্যায়। তার আগে নিজেদের ঘরের অন্দরে একাধিক প্রস্তাব নিয়ে নাড়াচাড়া চলছে।
ভোটের আগে শুধু বামফ্রন্টের ডাকে কর্মসূচি না নিয়ে সব বাম দল ও কংগ্রেস মিলিয়ে যৌথ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব নিয়ে কথা হচ্ছে সিপিএম এবং ফ্রন্টের অন্দরে। এমন ভাবনায় কংগ্রেসেরও আপত্তি নেই। পাশাপাশিই প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব চান, আন্দোলন বা আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে জেলা বা ব্লক স্তরে কোনও সমস্যা দেখা দিলে তার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাজ্য স্তরে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হোক। সূত্রের খবর, এই যাবতীয় প্রস্তাবই কাল বাম ও কংগ্রেসের আলোচনার টেবিলে আসতে চলেছে।
জোট বা আসন সমঝোতা থাকলেও প্রতি দলেরই নিজস্ব কর্মসূচি থাকে। কিন্তু ইদানীং কালে বাম দলগুলির নিজস্ব আন্দোলনের বাইরে এক বার বামফ্রন্ট, এক বার বাম ও সহযোগী মিলে ১৬ দল, এক বার ১৬ দল ও কংগ্রেস— এই রকম নানা ছাতায় কর্মসূচি হয়েছে! তাতে জনমানসে তো বটেই, বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও বিভ্রান্তি বেড়েছে। এই সমস্যা মেটানোর জন্যই একেবারে ১৬ দল ও কংগ্রেসকে নিয়ে মিলিত কর্মসূচির ভাবনা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘নানা রকম ভাগ না করে একটা গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রূপরেখা তৈরি করে যৌথ কর্মসূচি চালাতে পারলে ভোটের সময়ে মানুষের কাছে পরিচিতি রাখতেও সুবিধা হবে।’’
কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে সরাসরি গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মঞ্চ গড়ার প্রস্তাবও বামফ্রন্টে দিয়েছিল ফরওয়ার্ড ব্লক। কিন্তু বামফ্রন্টের গায়ে কোনও আঁচড় যাতে না লাগে, সে ব্যাপারে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু আবার অতি ‘স্পর্শকাতর’! বামফ্রন্টকে ভেঙে দেওয়ার কথা যে কেউ বলছে না, সেই ব্যাপারে বিমানবাবুর সঙ্গে আলোচনা করেছেন সিপিএম নেতারা। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও প্রকাশ্যে বলেছেন, কোনও কিছুই অবিকল আগের চেহারায় আর ফিরে আসে না!
এই পরিস্থিতিতে সোমবার ফ ব-র প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় রাজ্যে ‘অগণতান্ত্রিক ও সাম্প্রদায়িক শক্তি’র মোকাবিলায় কর্মসূচির ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ জোটের পক্ষেই সওয়াল করেছেন। সেখানে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস, বরুণ মুখোপাধ্যায়, হাফিজ আলম সৈরানি, হরিপদ বিশ্বাস-সহ দলের নেতৃত্ব।