প্রয়াত নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে কংগ্রেস মুখপত্রের ই-সংস্করণের প্রচ্ছদে সোমেন মিত্র। —নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে আপাতত বাতিল হয়েছে তাঁর স্মরণ-সভা। প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপত্রের প্রথম ডিজিটাল সংস্করণেই সোমেন মিত্রকে স্মরণ করলেন তাঁর দল এবং বাম ও কংগ্রেস নেতারা। ই-পত্রিকায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র লিখেছেন, বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতা এবং যৌথ আন্দোলনের কর্মসূচি বাস্তবায়িত করাই হবে প্রয়াত সোমেনবাবুকে স্মরণ করার শ্রেষ্ঠ উপায়।
কংগ্রেসের পত্রিকায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক লিখেছেন, গত লোকসভা ভোটে দু’পক্ষের আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। নির্বাচনের আগে মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে যুক্ত আন্দোলনের কর্মসূচি যে বেশি করে নিতে হবে, তা তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইচ্ছুক সব সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী শক্তিকে একজোট করার চেষ্টা আবার শুরু হয়েছে। যদিও করোনা পরিস্থিতি তাতে খানিকটা বাধ সেধেছে। সূর্যবাবুর মতে, ‘সোমেন মিত্রের স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানানোর সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় হল এই বোঝাপড়াকে সমৃদ্ধ করা এবং তার উপরে ভিত্তি করে নির্দিষ্ট কর্মসূচিগুলিকে সফল করা। আমরা এই লক্ষ্যে অবিচল থাকতে দায়বদ্ধ থাকব’। যৌথ আন্দোলনে শামিল প্রতিটি শক্তির নিজস্ব কর্মসূচি ও প্রতিরোধ বাড়লে তা আখেরে যৌথ আন্দোলনকেই শক্তিশালী করে বলেও যুক্তি দিয়েছেন সূর্যবাবু।
ই-পত্রিকায় তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় স্মৃতিচারণ করেছেন ছাত্র জীবন থেকে দীর্ঘ সময় সোমেনবাবুর সঙ্গে পথ চলার। তাঁর কথায়, ‘কর্মীদের জন্য এক গলা জলে নামতেও দ্বিধা করতেন না’। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী লিখেছেন তাঁর ‘পলিটিক্যাল মেন্টর’ সোমেনবাবুর হাত ধরে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কাহিনি। অধীরবাবুর মতে, ‘সোমেনদা’র রাজনৈতির সত্তার মধ্যে বামপন্থী ঘরানা বিরাজ করত’। রাজ্যসভার সেই বহুচর্চিত নির্বাচনে যাঁদের পরাজয় ও জয়লাভে সোমেনবাবুর ভূমিকা ছিল, সেই দেবপ্রসাদ রায় ও জয়ন্ত ভট্টাচার্য দু’জনেই পুরনো গল্প রোমন্থন করেছেন।
প্রদীপ ভট্টাচার্য লিখেছেন সোমেনের ‘সাংগঠনিক দূরদর্শিতা’র কথা। বাদল ভট্টাচার্য, কুমুদ ভট্টাচার্যদের কথায় উঠে এসেছে বন্ধু বিয়োগের প্রসঙ্গ। আবার আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য দেখিয়েছেন, সোমেনবাবু নিজেদের ভুল স্বীকারে দ্বিধা করতেন না। অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকারেরা কলম ধরলেও এই স্মরণ-সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের।
কংগ্রেস মুখপত্রের যুগ্ম কার্যনির্বাহী সম্পাদক অশোক ভট্টাচার্য ও অমিতাভ সিংহ জানিয়েছেন, প্রদেশ সভাপতি হিসেবে সোমেনবাবুর ইচ্ছা ছিল তাঁদের পত্রিকার ই-সংস্করণ হোক। সোমেনবাবুকে শ্রদ্ধা জানিয়েই সেই কাজ শুরু হল।