দুর্নীতির দ্রুত তদন্তের দাবিতে কলকাতায় বামফ্রন্টের মিছিল। মগরাহাটে যোগদান সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
নিয়োগ-দুর্নীতি এবং আইনশৃঙ্খলার জোড়া হাতিয়ারে শাসক দলের উপরে চাপ বাড়াতে সক্রিয় হল দুই বিরোধী পক্ষ বাম ও কংগ্রেস। দুর্নীতির তদন্তের গতি বাড়ানো এবং দ্রুত নিয়োগের দাবিতে মঙ্গলবার কলকাতায় ফের পথে নামল বামফ্রন্ট। একই দিনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ঘোষণা করলেন, চলতি মাসেই কলকাতার শহিদ মিনার ময়দানে কেন্দ্রীয় সমাবেশ করবে বামফ্রন্ট।
রাজ্যে দুর্নীতি, কেলেঙ্কারির যে অভিযোগ সামনে এসেছে, তার উৎস পর্যন্ত পৌঁছনোর দাবি নিয়ে এ দিন ধর্মতলা থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিল ছিল কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের ডাকে। মিছিলে ছিলেন সিপিএমের রবীন দেব, অনাদি সাহু, কল্লোল মজুমদার, সিপিআইয়ের প্রবীর দেব প্রমুখ। মিছিল শেষে সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোলের বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত শ্লথ হয়ে গিয়েছে। দুর্নীতির মামলায় যে বিচারপতি একের পর এক রায় দিচ্ছিলেন, তাঁকেও হঠাৎ করে কিছু মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা রেখেই বলছি, এই সব ঘটনার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ কিছু সন্দেহ তৈরি হয়েছে।’’ বাম নেতাদের দাবি, বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ‘বোঝাপড়া’র ফলে তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলে তাঁরা প্রতিবাদ তীব্র করবেন। সব অপরাধী ধরা না পড়া পর্যন্ত নিয়মিত রাস্তায় প্রতিবাদ চলবে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর এ দিন বিধান ভবনে বলেছেন, ‘‘রাজ্যে দুর্নীতি আকাশ ছোঁয়া। দুর্নীতির সব পাণ্ডা ধরা পড়েনি। তার মধ্যেই কালিয়াগঞ্জের মতো ঘটনা ঘটছে। এলাকায় গিয়ে স্থানীয় মানুষের কাছে জেনেছি, অপরাধীদের ধরার নামে পুলিশ আবার মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে। তৃণমূলের অপশাসন এবং বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদে শহিদ মিনার ময়দানে আমরা কেন্দ্রীয় সমাবেশ করতে চলেছি।’’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী ২২ বা ২৩ মে সমাবেশ হতে পারে। অধীর এ দিন গড়িয়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে দু’টি সভায় গিয়েছিলেন। দুই সভাতেই তৃণমূল ছেড়ে বেশ কিছু স্থানীয় নেতা-কর্মী কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। অধীরের মন্তব্য, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি করছেন, সেই সময়ে আমরা শাসক দলে ভাটা দেখছি! তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন লোকজন।’’ মগরাহাট পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক নমিতা সাহার পাল্টা দাবি, ‘ধান্দাবাজ’ যে লোকজন তাঁদের দলে ‘করেকম্মে খেতে এসেছিল’, তারাই বেরিয়ে গিয়েছে।