Congress

Congress Protest: কমিশনে বিক্ষোভ, বাংলা নিয়ে সরব পলিটবুরোও

তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় অবশ্য বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতিবাদের অধিকার সকলেরই আছে। গণতন্ত্র আছে বলেই প্রতিবাদ করতে পারছে। তবে যা অভিযোগ করা হচ্ছে, ঘটনা তেমন নয়।’’ সংগঠন এবং জনভিত্তিহীন বিরোধীরা রাজনীতিতে ভেসে থাকতে নানা কৌশল নিচ্ছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা দাবি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২২ ০৭:৫৮
Share:

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে কংগ্রেসের বিক্ষোভ।

রাজ্য জুড়ে পুরসভার নির্বাচনে ভোট লুঠ ও সন্ত্রাসের অভিযোগে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখাল বামেরা। ভোটের দিনের নানা ঘটনার ভিডিয়ো ক্লিপিংস কমিশনের হাতে তুলে দিয়ে জানানো হল পুনর্নির্বাচনের দাবি। কমিশন এবং শাসক দলের ভূমিকার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-অবস্থান থেকে সরব হলেন বাম নেতৃত্ব। সিপিএমের পলিটবুরো বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ করল, বাংলায় তৃণমূলের রাজত্বে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট সম্ভব নয়। পুরভোটের নামে প্রহসনের প্রতিবাদেই ভোটার পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি পুড়িয়ে বিক্ষোভে নামল কংগ্রেসও। শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব অবশ্য ফের দাবি করেছেন, মোট ১১ হাজারেও বেশি বুথে ভোট হয়েছে আর গোলমালের অভিযোগ এসেছে কম-বেশি ২০টিতে। ভোট নির্বিঘ্নে হয়নি, তা এর থেকে প্রমাণিত হয় না বলে শাসক দলের যুক্তি।

Advertisement

মোট ২০টি জেলার ১০৮টি পুরসভায় ভোটের শুরু থেকেই বহু জায়গায় মানুষের অধিকার প্রয়োগে শাসক দলের বাহিনী বাধা দিয়েছে বলে রবিবারই অভিযোগ করেছিল বামফ্রন্ট। পুলিশ-প্রশাসনের মদতে শাসক দলের বাহিনীর হাতে বিরোধী দলের প্রার্থী, এজেন্ট, কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারও আক্রান্ত হয়েছেন বলে তাদের অভিযোগ। তার প্রতিবাদেই সোমবার সরোজিনী নায়ডু সরণিতে কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ-অবস্থানের ডাক দিয়েছিল বামফ্রন্ট। বিক্ষোভে ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআইয়ের প্রবীর দেব, আরএসপি-র মনোজ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সৈরানিরা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের সঙ্গে দেখা করে বিমানবাবুরা বলেন, ভোটের দিনে কেমন ঘটনা ঘটেছে, তার ভিডিয়ো ক্লিপিংস তাঁরা কমিশনে দিয়ে যাচ্ছেন। সে সব স্ক্রুটিনি করে কমিশনই বলুক, এর পরেও পুনর্নির্বাচন করা উচিত কি না! বিক্ষোভ-অবস্থানে বিমানবাবু বলেন, ‘‘কী ভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা যায়, দেখাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হচ্ছে, রাজ্যে গণতন্ত্রের হত্যা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন নখ-দন্তহীন! কমিশনের এত নির্লিপ্ততা কেন?’’ সূর্যবাবু বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনারের লিখিত বয়ান দিয়ে জানানো উচিত, কী তাঁর পক্ষে করা সম্ভব আর কী নয়!’’

বাংলায় পুরভোটে অশান্তি ও ‘ভোট লুঠের’ তীব্র নিন্দা করে সিপিএমের পলিটবুরো এ দিনই বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ করেছে, ‘তৃণমূল ও রাজ্য প্রশাসনের যোগসাজশে বহুসংখ্যক মানুষ তাঁদের অধিকার প্রয়োগে বাধা পেয়েছেন। ভোটে জালিয়াতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, এক সময়ে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিও মেনে নেন পরিস্থিতি তাদের আয়ত্তের বাইরে’। প্রার্থী, এজেন্ট, বিরোধী দলের কর্মীরা কী ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তার ছবি সংবাদমাধ্যমে দেখা গিয়েছে জানিয়ে পলিটবুরোর মন্তব্য, ‘তৃণমূলের পরিচালিত সরকারের অধীনে এবং সম্পূর্ণ রাজনীতিকরণ হয়ে যাওয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে কোনও সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনই সম্ভব নয়’। তৃণমূল সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়ছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য গোটা দেশের গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষের কাছে আবেদন করেছে পলিটবুরো।

Advertisement

তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় অবশ্য বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতিবাদের অধিকার সকলেরই আছে। গণতন্ত্র আছে বলেই প্রতিবাদ করতে পারছে। তবে যা অভিযোগ করা হচ্ছে, ঘটনা তেমন নয়।’’ সংগঠন এবং জনভিত্তিহীন বিরোধীরা রাজনীতিতে ভেসে থাকতে নানা কৌশল নিচ্ছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা দাবি।

পুরভোটে ‘প্রহসন’ হয়েছে বলে অভিযোগ করে এ দিন কমিশনের সামনে প্রতিবাদ মিছিল করে এসে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। পোড়ানো হয় ভোটার পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি। বিক্ষোভে ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্র, কৃষ্ণা দেবনাথ, সুমন পাল, সৌম্য আইচ রায়েরা। টালিগঞ্জ ফাঁড়িতে বিক্ষোভ করেন আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়েরা। রাজ্য জুড়েই এ দিন মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে বামেরা ও পুলিশ সুপারের দফতরে কংগ্রেস বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। জলপাইগুড়িতে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ তুলতে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে বলে বামেদের অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement