রেড রোড সোমেন মিত্র, বিমান বসুরা (বাঁ দিকে)। চুচুড়ায় প্রতিবাদ সভায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান (ডান দিকে উপরে)। বর্ধমানে কংগ্রেস জেলা সভাপতির সঙ্গে বিক্ষোভ সভায় অমল হালদারেরা (ডান দিকে নীচে)।—নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং রাজ্যের তিন কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রচারের পরে কয়েক মাসের বিরতি পড়েছিল। পেট্রো-পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে হাতিয়ার করে ফের একসঙ্গে পথে নামল বাম ও কংগ্রেস। কলকাতার পাশাপাশি জেলায় জেলায় যৌথ প্রতিবাদে শামিল হলেন দু’পক্ষের নেতা-কর্মীরা। জোট শিবিরের পরবর্তী যৌথ কর্মসূচিও চূড়ান্ত হয়ে গেল।
রেড রোডে সোমবার বি আর অম্বেডকর মূর্তির সামনে বিক্ষোভ অবস্থানে যোগ দিয়েছিলেন বামফ্রন্ট ও প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। ভিড়ও হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সেখানে বলেন, ‘‘লিটার প্রতি পেট্রলে ১০ টাকা এবং ডিজেলে ১৩ টাকা শুল্ক চাপিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষ-মারা এই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আমরা সব বাম দল এবং কংগ্রেস প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে প্রতিবাদে নেমেছি। আগামী দিনে আরও কর্মসূচি হবে।’’ অতীতে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার মানুষকে স্বস্তি দিতে তেলে ২ টাকা ৮৭ পয়সা পর্যন্ত সেস মকুব করেছিল, সে কথাও মনে করিয়ে দেন বিমানবাবু। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘প্রতিবাদ এবং সরকারকে প্রতিহত করতে একসঙ্গে রাস্তায় নেমেছি। রাস্তাই আমাদের রাস্তা দেখাবে।’’ কেন্দ্রে বিজেপি ও রাজ্যে তৃণমূল সরকারকে উৎখাতের ডাকও দিয়েছেন তিনি।
প্রতিবাদেরর ফাঁকেই আলোচনায় ঠিক হয়েছে, শহরে বাম-কংগ্রেসের পরবর্তী যৌথ কর্মসূচি হবে ৭ জুলাই। তার আগে ১ জুলাই বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনে বিধান ভবনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে বাম নেতাদের এ দিন চিঠি পাঠিয়েছে কংগ্রেস। পর দিন, ২ জুলাই প্রয়াত অশোক ঘোষের জন্মদিনে ফরওয়ার্ড ব্লকের দফতর হেমন্ত বসু ভবনে যাবেন সোমেনবাবুরা।
দু’তরফের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি এ দিন হাজির ছিলেন কংগ্রেসের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠনের নেতৃত্বও। দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা রেড রোডে আসেন সাইকেলে চেপে। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান হুগলির চুঁচুড়ায় বিক্ষোভ-সভায় ছিলেন সিপিএম নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরী, প্রাক্তন সাংসদ রূপচাঁদ পাল, সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষেদের সঙ্গে। বহরমপুরে কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিলে কাঁধে মোটরবাইক চাপিয়ে এসেছিলেন কর্মী-সমর্থকেরা। এমনকি, সিপিমের রাজনীতিতে জোটপন্থী বলে পরিচিতি না থাকলেও পূর্ব বর্ধমানে অমল হালদার, অচিন্ত্য মল্লিকেরা যৌথ প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন কংগ্রেসের কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায়দের সঙ্গে।