Congress

নজরে সংখ্যালঘু, কর্মসূচি সাজাচ্ছে বাম-কংগ্রেস জোট

বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনের ফলাফল এবং বাংলায় বিধানসভা ভোটে মিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণার প্রেক্ষিতে সংখ্যালঘু সমর্থন নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে কংগ্রেস তথা জোট শিবিরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০৫
Share:

জোটবৈঠক: কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান, অধীর চৌধুরীর সঙ্গে সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র এবং বিমান বসু। মঙ্গলবার রিপন স্ট্রিটে। ছবি: সুমন বল্লভ

বিধানসভা ভোটের আগে সংখ্যালঘু মনের দিকে নজর রেখে আরও বেশি তৎপরতা বাড়াচ্ছে বাম ও কংগ্রেস। এক দিকে বিজেপির আগ্রাসন এবং অন্য দিকে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মিম-এর মতো শক্তির বাংলায় ‘অনুপ্রবেশ’-এর প্রেক্ষিতে এ বার প্রথম সংখ্যালঘু দিবস পালনের ডাক দিল বামফ্রন্ট। ওই কর্মসূচিতে আহ্বান জানানো হয়েছে কংগ্রেসকেও।

Advertisement

বামফ্রন্টের বৈঠকে মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বর যে সংখ্যালঘু দিবস হিসেবে স্বীকৃত, সেই দিনটি এ বার তারাও পালন করবে। তার আগে ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পালন হবে। পরে সন্ধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকেও বাম নেতারা ওই কর্মসূচি পালনের প্রস্তাব দিয়েছেন। পাশাপাশিই কংগ্রেস নেতারা বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী কর্মসূচি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই আর্থিক প্রশ্নেও আরও বেশি সরব হতে হবে।

বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনের ফলাফল এবং বাংলায় বিধানসভা ভোটে মিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণার প্রেক্ষিতে সংখ্যালঘু সমর্থন নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে কংগ্রেস তথা জোট শিবিরে। ত্বহা সিদ্দিকি, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীদের হাত ধরে সংখ্যালঘু সমর্থনের একটা বড় অংশ আছে তৃণমূলের পক্ষে। কংগ্রেস নেতৃত্ব চেষ্টা করছেন মিম-এর দৌলতে সংখ্যালঘু ভোটে আরও বিভাজন যাতে ঠেকানো যায়। সেই লক্ষ্যেই এ দিন ফুরফুরা শরিফে ইব্রাহিম সিদ্দিকি ও আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি। কারণ, তিনি আলাদা দল তৈরি করেই ভোটে লড়তে আগ্রহী। ইব্রাহিম অবশ্য ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে থাকার কথা বলেছেন। পরে অধীরবাবু এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের বলেছি, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে আরও শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করার দিকে আমাদের সকলকেই নজর দিতে হবে।’’

Advertisement

আলিমুদ্দিনে বামফ্রন্ট এবং বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব এ দিন নিজেদের বৈঠক করার পরে সন্ধ্যায় আরএসপি-র ক্রান্তি প্রেসে মুখোমুখি আলোচনায় বসে দু’পক্ষ। কংগ্রেসের তরফে অধীরবাবু, মান্নানের সঙ্গে ছিলেন মনোজ চক্রবর্তী ও ঋজু ঘোষাল। বামেদের তরফে ছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, নরেন চট্টোপাধ্যায়, মনোজ ভট্টাচার্য, অশোক ঘোষ ও অশোক রায়। অধীরবাবু বৈঠকে ব্যাখ্যা করেন, বিজেপির ‘আগ্রাসন’, তৃণমূলের ‘স্বৈরাচার’ এবং মিম-এর ‘অনুপ্রবেশ’— বাংলায় এই রকম কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি স্বাধীনতার পর থেকে কখনও তাঁদের হতে হয়নি। একমত হন সূর্যবাবু। অধীরবাবুর প্রস্তাব, দু’পক্ষই একটি করে ‘কোর গ্রুপ’ তৈরি করুক, যারা আসন ভাগ নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাবে। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ২৬ নভেম্বরের ধর্মঘটের সমর্থনে ২৩ তারিখ কলকাতায় যৌথ মিছিলে যোগ দেবেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। আর ২২ তারিখ ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে হবে যৌথ শান্তি মিছিল।

বৈঠকের পরে অধীরবাবু বলেন, ‘‘নিচু তলায় সাধারণ কর্মীরা নিজেদের তাগিদে জোট গড়ে নিচ্ছেন। এ বারের জোট তাই উপর থেকে নীচে নামছে না, নীচে থেকে উপরে উঠছে। ফলে, এ বার জোট আরও ভাল ভাবে হবে।’’ রাজ্য স্তরে আলোচনার পাশাপাশি কংগ্রেস ও সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও যাতে কথা বলে এগোন, সেই প্রসঙ্গও এসেছিল বৈঠকে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন কর্মসূচি চলবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement