—ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাইকোর্ট-সহ রাজ্যের সব আদালতে আইনজীবীরা দীর্ঘ প্রায় একটি মাস কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। এই অবস্থায় তাঁরাও চান, কর্মবিরতি আপাতত স্থগিত থাকুক। কিন্তু শীর্ষ সংগঠন সদর্থক ভূমিকা না-নিলে তাঁরা বার কাউন্সিলে ফের নির্বাচনের দাবিতে সরব হবেন বলে জানালেন আইনজীবীদের একাংশ। তাঁদের তরফে আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সোমবার অভিযোগ করেন, কাউন্সিল একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মর্জিমাফিক কাজ করছে। কর্মবিরতি স্থগিত রাখার ব্যাপারে কাউন্সিলের তড়িঘড়ি নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে ‘সারা বাংলা আইনজীবী ঐক্য মঞ্চ’ গড়েছেন ওই আইনজীবীরা।
হাওড়া আদালতের আইনজীবীদের উপরে পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনায় কাউন্সিল ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ তুলে ওই আইনজীবীরা এ দিন জানান, তাঁদের অন্ধকারে রেখে অন্দোলন আপাতত স্থগিত রাখার একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলের এক কর্তা জানান, সংগঠনের কর্মসমিতির ২৫ জন সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেই ২৪ মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শীর্ষ সংগঠনের সদর্থক ভূমিকা বলতে কী বোঝায়, তার ব্যাখ্যা দিয়ে ওই আইনজীবীরা জানান, হাওড়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে বার কাউন্সিলের কর্মকর্তারা এখনও মুখ্যমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রীর কাছে যাননি। অভিযোগ জানাননি, বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়াতেও। আইনজীবীদের উপরে লাঠি চালানোর ঘটনায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের যেন কোনও কাজ দেওয়া না-হয়। কিন্তু সেই নির্দেশ মানার জন্য প্রশাসনের উপরে চাপ সৃষ্টি করেননি কাউন্সিলের কর্তারা।
হাওড়া আদালতের আইনজীবী সুকান্ত বসু এ দিন অভিযোগ করেন, কর্মসমিতির সব সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেই যদি আপাতত কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে ২৪ মে বেলা ৩টের বদলে বেলা সাড়ে ১১টায় কেন তড়িঘড়ি বৈঠক হয়েছিল, তার জবাব মেলেনি। ওই আইনজীবী জানান, হাইকোর্ট নিযুক্ত এক সদস্যের বিচার বিভাগীয় কমিশন তিন মাস পরে কী রিপোর্ট দেয় এবং সেই রিপোর্ট পেয়ে ডিভিশন বেঞ্চ আর কী কী নির্দেশ দেয়, তা দেখে নিয়ে তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।
কাউন্সিলের ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান প্রসূন দত্ত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘নির্বাচিত সদস্যেরা কর্মবিরতি আপাতত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আইনজীবীরা আদালতে কাজও শুরু করেছেন। প্রয়োজনে ফের কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।’’