মাওবাদীদের নাম করে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে শুক্রবার শালবনির এক সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত বীরেন চালক ওরফে বীরবলের বাড়ি থেকে ল্যান্ডমাইন, বন্দুক, গুলি এবং মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার মিলেছে বলে দাবি পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের। তবে ঘটনায় রাজনৈতিক চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে সিপিএম।
সাংবাদিক সম্মেলন করে
ভারতী এ দিন বলেন, “বীরেন চালক একটি রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী। জানতে পেরেছি, শালবনির একটি পার্টি অফিসে বসে ঠিক হয়, মাইন পুঁতে, মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার দিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হবে।’’ পুলিশ সুপারের দাবি, বুধবার সন্ধ্যার সেই বৈঠকে বীরেনও ছিলেন। এ দিন সকালে তাঁর বাড়ি থেকেই মাইন, বন্দুক, গুলি, পোস্টার উদ্ধার হয়।
স্বাধীনতা দিবসের আগে জঙ্গলমহলে মাওবাদীরা বড়সড় হামলা চালানোর ছক করেছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ বিভাগ ইতিমধ্যে নবান্নে একটি বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছে। তবে পুলিশ সুপারের দাবি, ‘‘কিছু দুষ্টু লোক মাওবাদীদের নাম করে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে। তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মিলল। পিড়াকাটা-লালগড় পিচ-রাস্তায় মাইন পুঁতে কিছুটা উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।’’ তাঁর বক্তব্য, বীরেনকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, এই ষড়যন্ত্র শুধু শালবনিতে সীমাবদ্ধ নয়, অন্যত্রও এই চেষ্টা চলছে।
বছর চল্লিশের বীরেনের পিড়াকাটার পেঁচাপাড়ার বাড়ি থেকে তিনটি ল্যান্ডমাইন, তিনটি বন্দুক (একটি সেল্ফ লোডিং রাইফেল, দু’টি গাদা বন্দুক— তিনটিই মরচে ধরা), ২১ রাউন্ড গুলি এবং মাওবাদীদের নাম করে লেখা পোস্টার উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। কোনও পোস্টারে লেখা, ‘কিষেণজিকে আলোচনার নাম করে মারা হল কেন জবাব দাও’, কোনওটিতে, ‘পুলিশের চর সিভিক পুলিশ হুঁশিয়ার’। ধৃতকে আজ, শনিবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হবে।
বীরেনকে দলীয় সমর্থক বলে মেনে সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, “এটা মিথ্যা মামলা। শাসক দলের নির্দেশে পুলিশ এ সব করছে।” সিপিএমের শালবনি জোনাল সম্পাদক শ্যাম পাণ্ডের দাবি, বুধবার তাঁদের পার্টি অফিসে কোনও বৈঠক হয়নি।
তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘‘জঙ্গলমহলে মাওবাদী বলে কিছু নেই। সিপিএমই এ সব করে আতঙ্কের স্মৃতি উস্কে দিতে চাইছে।’’