ফাইল চিত্র।
বাম ছাত্র-যুবদের মিছিলে ‘অমানবিক’ ভাবে লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে। এ বার মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধেই জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করল লালবাজার। শুক্রবার কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ মিছিলকারীদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৩, ৩৪১, ২৮৩, ৩৩২, ৩৫৩ ও ৫০৬ নম্বর এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষা আইনের তিন নম্বর ধারায় মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারই ৪২ জন মিছিলকারী গ্রেফতার হন। মামলা রুজুর পরে শুক্রবার নতুন গ্রেফতারির খবর নেই।
পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, সরকারি কর্মীকে মারধর (৩৩২) ও তাঁর কাজে বাধা দানের অভিযোগ (৩৫৩) জামিন-অযোগ্য ধারা। বেআইনি জমায়েত (১৪৩), হাঙ্গামা (১৪৭), মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে হামলা (১৪৮) ও অবরোধের (২৮৩) অভিযোগও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের ওই মিছিলটিকে এস এন ব্যানার্জি রোডে আটকায় পুলিশ। মিছিলকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে প্রথমে জলকামান ও পরে লাঠি চালায় পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। আহত হন বহু মিছিলকারী। পুলিশের লাঠিতে অনেকে জখম হন বলে অভিযোগ। মাটিতে পড়ে গেলেও তাঁদের পুলিশ রেয়াত করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্তের মতে, মাথায় লাঠি চালানো পুলিশের নিয়মবিরুদ্ধ। ছত্রভঙ্গ করতে পায়ের পিছনে লাঠি চালানোই নিয়ম। পুলিশ সূত্রের পাল্টা দাবি, মিছিলকারীদের ছোড়া ইটে তাদেরও অনেকে আহত হয়েছেন।
নবান্ন অভিযানের উদ্যোক্তাদের তরফে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্রের বক্তব্য, ‘‘যে পুলিশ জালিয়ানওয়ালাবাগের কায়দায় চার দিক ঘিরে তরুণ-তরুণীদের নৃশংস ভাবে মেরেছে, তাদের শাস্তি চাই। পুলিশ তৃণমূলের কথায় মিথ্যা মামলা সাজালে আমরাও আইনের রাস্তায় যাব।’’ সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘কী ভাবে ভিড় সামলাতে হয়, জনতার মোকাবিলা করতে হয়, তার ন্যূনতম নমুনাও নবান্ন অভিযানে দেখা যায়নি। অনেকের চোট গুরুতর। চাকরি চাইতে যাওয়া ছেলেমেয়েদের উপরে নবান্নের নির্দেশেই পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়ে। শাসকের কথায় পুলিশ-প্রশাসন কাজ করছে।’’ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন।