কুড়মালি আন্দোলনের জেরে বাতিল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বেশ কয়েকটি ট্রেন। —নিজস্ব চিত্র।
সকাল গড়িয়ে রাত নামলেও কুড়মালি আন্দোলনের গতি স্তব্ধ হয়নি। বরং তা রাতভর চলবে বলে হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এই আন্দোলনের জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আরও ১৮টি ট্রেন বাতিল করলেন রেল কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ১৯টি ট্রেনকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া, তিনটি ট্রেনের সময়সূচিতে বদল আনা হয়েছে। এবং দু’টির গন্তব্যের আগেই যাত্রা শেষ করেছে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে থেকেই শুরু হয়েছে কুড়মালি আন্দোলন। কুড়মি জাতিকে তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত করার দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলির অন্তর্ভুক্তির দাবি নিয়ে পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। এই আন্দোলনের জেরে বহু জেলায় ট্রেন অবরোধ এবং রাস্তা রোকো কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এর জেরে আটকে পড়েছে বহু ট্রেন। যদিও এই আন্দোলনে গতি কমবে না বলে হুমকি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
ছোটনাগপুর টোটেমিক কুড়মি মাহাতো সম্প্রদায়ের আহ্বানে মঙ্গলবার সকাল থেকেই জাতীয় সড়ক এবং রেল রোকো কর্মসূচি শুরু হয়েছে। যার ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার মাঝে খেমাশুলি এলাকায়। খড়্গপুর-টাটা লাইনে ট্রেন চলাচলে সমস্যার পাশাপাশি ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধের জেরে খড়্গপুর থেকে ঝাড়গ্রাম এবং বোম্বে রোডে সমস্যায় পড়েছেন বহু যাত্রী। অনির্দিষ্ট কালের এই আন্দোলনে চিরাচরিত অস্ত্রশস্ত্র ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে যোগদানের আহ্বান করা হয়েছিল। মঙ্গলবার খেমাশুলিতে প্রায় ৫০ হাজার বিক্ষোভকারী এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। কুড়মি রাজ্য সম্পাদক রাজেশ মাহাতো বলেন, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের মাঝে খেমাশুলি, পুরুলিয়ার কুস্তাউর এলাকায় রেল রোকো এবং রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরে রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধের বিরোধিতা করলেও মঙ্গলবার পুরুলিয়ার কুস্তাউর রেল স্টেশনে অবরোধকারীদের সঙ্গে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন পুরুলিয়া জেলার তৃণমূল যুব সভাপতি মেঘদূত মাহাতো, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতো-সহ একাধিক নেতা।
রেললাইনে বসে বিক্ষোভের সকাল থেকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলে একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। পুরুলিয়ার কুস্তর স্টেশনে ‘রেল রোকো’ আন্দোলনের জেরে মঙ্গলবার একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল ঘোষণা করেন রেল কর্তৃপক্ষ। বেশ কিছু ট্রেনের গতিপথও পরিবর্তিত হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে বিবৃতি দিয়ে বাতিল ট্রেনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। যাত্রীদের হয়রানির জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ।