নিয়োগ মামলায় ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ মামলায় ধৃত তথা হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ আদালতে ঢোকার মুখে ফের বিস্ফোরক। একটি বন্ধ খাম সাংবাদিকদের দেখিয়ে তিনি দাবি করলেন, ইডির বিরুদ্ধে প্রমাণ রয়েছে সেই খামে। তবে খামের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আর বেশি কিছু খোলসা করেননি কুন্তল। স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, আদালতে গিয়ে খামটি জমা দেবেন তিনি।
কুন্তলকে সোমবার আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয়েছে। আদালতে প্রবেশের মুখে সাংবাদিকেরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। গাড়ি থেকে নামার সময় কুন্তল হাত তুলে একটি খাম দেখান। তার পর বলেন, ‘‘আমি একটা কথা বলব। ইডি যে ভাবে মিথ্যা কথা বলিয়েছে, এই হল তার প্রমাণ।’’ কী আছে সেই খামের ভিতরে? সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে কুন্তল যেতে যেতে পিছন ফিরে বলেন, ‘‘আদালতকে দেখাব।’’ কাকে দিয়ে কী মিথ্যা বলিয়ে নিয়েছে ইডি? তার জবাবও মেলেনি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে হেনস্থার বিবিধ অভিযোগ তুলে বার বার সরব হয়েছেন কুন্তল। নিয়োগ মামলায় আগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে তাঁর একটি চিঠি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম করতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পরেই কুন্তল দাবি করেন, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠিও দেন কুন্তল। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠান কলকাতার হেস্টিংস থানাতে। সেই মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ইডি বা সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সেই মতো অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিলেও ইডির তলবে পরে আর যাননি অভিষেক।
পরে এই সংক্রান্ত মামলায় কুন্তলকে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কুন্তল। শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, ইডির বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ জেলা জজের কাছে জানাতে পারবেন কুন্তল। এখন দেখার, আদালতে তাঁর বন্ধ খামের ভিতর থেকে কী নথি বেরোয়, তাতে কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসে কি না।