গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে বৃহস্পতিবার ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ মন্তব্য করেছিলেন কুণাল ঘোষ। যোগ্যতার কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর জুতো পালিশ করারও যোগ্য নন সুকান্ত মজুমদারেরা।’’ শুক্রবার সেই কুণালই একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, নিজের পা থেকে চামড়ার চটি খুলে শুভেন্দু এক জনকে মারতে উদ্যত হচ্ছেন। সেখানে বিভিন্ন কথাও বলতে শোনা যাচ্ছে শুভেন্দুকে (কুণালের পোস্ট করা ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, দূরে একদল লোক দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সেখান থেকে ভেসে আসছে ‘চোর-চোর’ স্লোগান। তাঁদের উদ্দেশে পায়ের চটি খুলে হাতে তুলে দেখাচ্ছেন শুভেন্দু। সঙ্গে বলছেন, ‘‘সরা ওদের, সরা সরা।’’ কয়েক ফুট দূরেই দাঁড় করানো ছিল বিরোধী দলনেতার কালো স্করপিও। গাড়ির মাঝের আসনে ওঠার পাদানিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু চারিদিকে তাকিয়ে চিৎকার করতে থাকেন, ‘‘তোর বাপ আমি, তোর বাপ আমি, তোর বাপ।’’ আরও বিভিন্ন বিশেষণ শোনা যাচ্ছে শুভেন্দুর মুখে। এই ভিডিয়ো পোস্ট করে কুণাল লিখেছেন, ‘‘মানে কী? এ তো সব্বোনাশ!’’
কুণালের দাবি, ঘটনাটি শুক্রবার বিকেলের। শুভেন্দু রানাঘাটে যাওয়ার সময়ে ওই কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, শুভেন্দুও একটি এক্স পোস্ট করেছেন। তাতে তিনিও লিখেছেন, শুক্রবার বিকেলে তিনি রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত গাংনাপুরে গিয়েছিলেন। শুভেন্দু লিখেছেন, ‘‘সদ্যসমাপ্ত রানাঘাট দক্ষিণের উপনির্বাচনে যে হিন্দু ভোটারদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি, আমি তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। যাওয়ার সময় আমার পথ আটকায় তৃণমূলের গুন্ডারা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমার ক্ষতি করা। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি।’’ এ ব্যাপারে তিনি গাংনাপুর থানার আইসি অনুপম ঢালিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। শুভেন্দুর দাবি, রানাঘাট দক্ষিণে এই পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে তৃণমূল ভোট লুট করেছিল। শুভেন্দু এবং কুণাল যে ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন, পরিপার্শ্ব দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে, একই জায়গার।
শুভেন্দুর রেগে যাওয়া, অভিব্যক্তি ইত্যাদি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। কটাক্ষ করে কুণাল বলেছেন, ‘‘দায়িত্বশীল যে কোনও নেতার উচিত এই সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখা। জানি শুভেন্দুকে সুকান্তেরা বিরক্ত করছেন। তাই হতাশা দেখিয়ে ফেলেছেন। উনি আসলে জুতো মারতে চান দলেরই এক জনকে। কিন্তু দেখিয়ে ফেলেছেন ভুল জায়গায়।’’
অতীতেও শুভেন্দুর উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন কাণ্ডকারখানার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল। কখনও তা আশুতোষ কলেজের পাশের রাস্তায়, কখনও বা হলদিয়ার দুর্গাচকে। কখনও শুভেন্দু তেড়ে গিয়েছেন, কখনও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘বিরবাহা হাঁসদা (রাজ্যের মন্ত্রী), দেবনাথ হাঁসদাদের আমি জুতার তলে রাখি।’’ শুক্রবার আরও একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এল।