গত ২৭ মার্চ সিপিএম নেতা শতরূপের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কুণাল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
তাঁকে ‘টেস্ট টিউব বেবি’ বলে অপমান করেছেন বাম নেতা শতরূপ ঘোষ! অপমান করা হয়েছে তাঁর পরিবারকেও। বাম নেতার মন্তব্যের জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে দাবি করে মানহানির আইনি নোটিস পাঠালেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। শতরূপের মন্তব্যে অবস্থান স্পষ্ট করতে বলে নোটিস পাঠানো হল বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকেও। কুণালের তরফে তাঁর আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী এই নোটিসটি পাঠিয়েছেন। সেই নোটিসে জানানো হয়েছে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনালের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বামনেতাদের। ক্ষমা না চাইলে বামনেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে মানহানির মামলা করা হবে বলেও নোটিসে উল্লেখ রয়েছে।
গত ২৭ মার্চ সিপিএম নেতা শতরূপের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কুণাল। একটি টুইট করে কুণাল দাবি করেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় শতরূপ জানিয়েছিলেন, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। অথচ সম্প্রতি প্রায় ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন বাম নেতা। এবং তিনি পুরো টাকা মিটিয়েছেন এক দফাতেই। নথি প্রকাশ করে শতরূপের গাড়ি কেনার প্রমাণও দেন কুণাল। এই টাকার উৎস নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
শতরূপ অবশ্য এই গাড়ি কেনার সত্যতা স্বীকার করে নেন। এই দাবিও করেন, তিনি গাড়িটি কিনেছেন বাবার টাকায়। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমে কুণালকে নিয়ে নানাবিধ মন্তব্যও করেন শতরূপ। শতরূপ মন্তব্য করেন, কুণাল ছাড়াও তাঁর বাবার নাকি আরও গোপন সন্তান রয়েছে। পাশাপাশি প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদকে ‘টেস্ট টিউব বেবি’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
কুণালের আইনজীবীর তরফে পাঠানো নোটিসে বলা হয়েছে, বিমান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এবং সেলিম সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক— এই পদে থেকেও তাঁরা শতরূপের মন্তব্যের কোনও নিন্দা করেননি। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এই প্রসঙ্গে তাঁরা প্রতিক্রিয়া দেননি। এতে প্রমাণ হয় যে, শতরূপের মতো সেলিম এবং বিমানও এই অসম্মানজনক কথাবার্তা সমর্থন করেন।
এই নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্টও করেন কুণাল। সেখানে শতরূপকে কটাক্ষ করে তিনি লেখেন, ‘‘কমিউনিস্ট পার্টির হোলটাইমার, বার বার হারে, দামড়া ছেলে বাবার টাকা দিয়ে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে ফুটানি, তা নিয়ে প্রশ্ন করলে কুৎসিত আক্রমণ!! বহু সিপিএম সমর্থককে ধন্যবাদ, যাঁরা প্রয়াত বাবাকে টেনে কুৎসিত আক্রমণের বিরোধিতা করেছেন।’’
যদিও কুণালের এই আইনি নোটিসকে আমল দিতে রাজি নন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। পাশাপাশি তিনি যে কুণালের কাছে কোনও ভাবেই ক্ষমা চাইবেন না, তা-ও নিজের বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন শতরূপ। তিনি বলেন, ‘‘মানহানির মামলার জন্য ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না কুণালকে। ওঁকে বলুন এখনই মামলা করতে। আমরা বিষয়টিকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’