কুণাল ঘোষ
রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ তৃণমূল থেকে ‘সাসপেন্ড’ হওয়া কুণাল ঘোষ দলে ফের ‘মর্যাদা’ পেলেন। এখন থেকে তিনি রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন।
মঙ্গলবার দলীয় মুখপাত্রদের নামের দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। সেখানে রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এত দিন সর্ববিষয়ে যিনি কথা বলতেন তৃণমূলের মহাসচিব সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শুধু জাতীয় স্তরে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজ্য স্তরের ২২ এবং জাতীয় স্তরের ১২ জনের এই তালিকায় মুখপাত্র হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম বা অরূপ বিশ্বাসের মতো সক্রিয় ও পরিচিত মুখের মন্ত্রীরা নেই। তবে রাজ্য স্তরের তালিকায় ঠাঁই হয়েছে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলে ‘রাঘববোয়ালেরা দুর্নীতিতে জড়িত’ বলে মন্তব্য করে অল্পদিন আগে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন তিনি।
রাজ্য স্তরে দল যাঁদের মুখপাত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে তাঁদের একটি বড় অংশই হল নবীন প্রজন্মের প্রতিনিধি। কয়েক দিন আগে সাংগঠনিক রদবদলে তাঁরা পদ পান।
তবে সব থেকে চমকপ্রদ বাছাই অবশ্য কুণাল। এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। মুকুল রায়ের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল যথেষ্ট। দলের উপরতলায় কার্যত প্রভাবশালী অংশের এক জন বলে তাঁকে মনে করা হত। কিন্তু সারদা মামলায় জড়িয়ে লম্বা হাজতবাসের সময় থেকে কুণাল তৃণমূলের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় মুখ খুলেছিলেন। এবং তাঁর ওই পরিণতির জন্য দলীয় নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। কিছু দিন ধরে অবশ্য তিনি তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে সচেষ্ট হন। এমনকি শীর্ষ স্তরে দু’এক জনের বাড়িতে যাতায়াত করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
কুণাল অবশ্য এ দিন দাবি করেন, ‘‘দল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার কোনও চিঠি আজ পর্যন্ত আমার কাছে নেই। আমি বরাবরই তৃণমূলের। সাংসদ হিসেবে পাওয়া আমার বেতন থেকে তহবিলে নিয়মিত চাঁদাও দিয়েছি।’’ তাঁর এই ‘মর্যাদালাভের’ সঙ্গে মুকুলের তৃণমূলে ফেরার গুঞ্জন কোনও ভাবে অর্থবহ হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন এখনও ঘুরছে। যদিও মুকুল প্রকাশ্যে সে সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়েছেন। আর কুণালের মন্তব্য, ‘‘মুকুলদা চোখের চিকিৎসা করাচ্ছেন। আশা করি, তাঁর সঠিক দৃষ্টি এ বার ফিরবে।’’