সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে উল্টোডাঙা উড়ালপুল

সেপ্টেম্বর থেকেই উল্টোডাঙা উড়ালপুল গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানালেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভেঙে পড়া অংশের মূল কাজ অর্থাৎ গার্টার লাগানো শেষ। আশা করা যায় সেপ্টেম্বর থেকে উড়ালপুলটি খুলে দেওয়া যাবে।” গত বছর ২ মার্চ গভীর রাতে উড়ালপুলে ভিআইপি রোড থেকে বাইপাস যাওয়ার একটি ডেক ভেঙে পড়ে উল্টোডাঙা খালে। একটি ট্রাক পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন তিন আরোহী। তার পর থেকেই উড়ালপুলটি বন্ধ।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০২:২১
Share:

সেপ্টেম্বর থেকেই উল্টোডাঙা উড়ালপুল গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানালেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভেঙে পড়া অংশের মূল কাজ অর্থাৎ গার্টার লাগানো শেষ। আশা করা যায় সেপ্টেম্বর থেকে উড়ালপুলটি খুলে দেওয়া যাবে।”

Advertisement

গত বছর ২ মার্চ গভীর রাতে উড়ালপুলে ভিআইপি রোড থেকে বাইপাস যাওয়ার একটি ডেক ভেঙে পড়ে উল্টোডাঙা খালে। একটি ট্রাক পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন তিন আরোহী। তার পর থেকেই উড়ালপুলটি বন্ধ। ভেঙে পড়া ডেক ও ট্রাকটি দীর্ঘ কয়েক মাস খালে পড়ে থাকার পরে সেগুলি তোলা হয়। শুরু হয় নতুন করে নির্মাণের কাজ।

কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, ভেঙে পড়া অংশের গার্টার লাগানো শেষ। বাকি শুধু তার উপরে কংক্রিটের স্ল্যাব বসানো। এর পরে রাস্তায় ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট লাগানো, রেলিং তৈরি ও বাতিস্তম্ভ বসানো হবে। তবে এই কাজগুলি এক মাসেই শেষ হবে বলে তাঁদের দাবি। কেএমডিএ-র এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার উদয়ন মণ্ডল বলেন,“চলতি মাসেই কংক্রিটের স্ল্যাব বসে যাবে। বাকি কিছু কাজ ও কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই গাড়ি চলাচলের ছাড়পত্র দেওয়া হবে।” উদয়নবাবু জানান, ভেঙে পড়া অংশটি কাস্তের মতো বাঁকা। যাকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরিভাষায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের বাঁক বলা হয়। তাই খুব সাবধানতা অবলম্বন করে কাজ করতে হচ্ছে। ওই অংশে বক্স গার্টার লাগানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

প্রায় ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই ভেঙে পড়া অংশটি যে সময়ের মধ্যে জোড়া লাগানোর কথা ছিল, তার থেকে কিছুটা দেরিতে কাজ শেষ হচ্ছে। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, ডেক নির্মাণের জন্য প্রথমে কোনও সংস্থাই আসছিল না। এক বার টেন্ডার হয়েও তা বাতিল হয়। ফের নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়। ফলে কাজ শুরু হতে দেরি হয়। তবে ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, কাজ শুরুর পরে তার মানের সঙ্গে কোনও আপস করা হচ্ছে না। লাগানো হচ্ছে সর্বোচ্চ মানের স্টিলের গার্টার। ভাঙা অংশে মোট দু’টি গার্টার লাগানো হবে, যা ২২ টন ওজনের দশটি ভাগে ভাগ করা আছে। উদয়নবাবু জানান, মুম্বইয়ে এ রকমই ভারী গার্টার লাগানোর সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে। এখানে যাতে তেমন কিছু না ঘটে, সে দিকেও বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারেরা জানান, এ বারও উড়ালপুলের ওই অংশে কেষ্টপুর খালের উপর কোনও সাপোর্ট থাকবে না। ফলে খাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সম্ভাবনা নেই।

উল্টোডাঙা উড়ালপুলের দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপকেরা। অধ্যাপক দীপঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “নকশার কিছু ত্রুটিতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। সেই রিপোর্ট দিয়েছি অনেক দিন আগেই। এর পরেই সেতুর ওই অংশে পুনর্নির্মাণ শুরু হয়।”

ভাঙা অংশ নির্মাণের সময়ে নকশার বিশেষ বদল না হলেও বেয়ারিং-এ কিছু পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানান ইঞ্জিনিয়ারেরা। কারণ, দুর্ঘটনার পরে ভাঙা অংশের বেয়ারিংয়ের মান ঠিক ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ফরেন্সিক বিভাগ বেয়ারিং-সহ কিছু নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়। ইঞ্জিনিয়ারেরা জানান, বেয়ারিং লাগানোর জায়গা কিছুটা বদলেছে। তাঁদের দাবি, এ বার অনেক ভাল মানের বেয়ারিং লাগানো হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement