এ ভাবেই ওঠা-নামা। —নিজস্ব চিত্র।
জিডি আইল্যান্ডের কাছে স্কুলবাসের চালক গতি কমালেন। এক ছাত্র বাস থেকে নামতে গিয়ে পড়ে গেল। খালাসি খেয়াল করেনি। ফলে বাসও থামেনি। লোকজনের চিৎকারে ভয় পেয়ে গতি বাড়িয়ে পালায় চালক। হাসপাতালে মৃত্যু হয় ছাত্রটির। জুলাই-এর প্রথম সপ্তাহে এই ঘটনার পরেই নড়ে বসে বিধাননগর পুলিশ।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে পড়ুয়াদের স্কুলে যাতায়াত এবং নিরাপত্তায় বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছে বিধাননগর কমিশনারেট। এ বিষয়ে এলাকার নানা স্কুলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। স্কুলবাস মালিক, চালক ও খালাসিদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবিরও হয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, অনেক স্কুলবাসেই খালাসি নেই। কিছু চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। বাসগুলি নির্দিষ্ট জায়গায় পড়ুয়াদের ওঠায়-নামায় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাস মালিক ও চালকদের সম্পর্কে তথ্য অভিভাবকদের কাছে থাকে না। থাকে না স্কুলের কাছেও। অনেক বাসে অগ্নিনির্বাপক, প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামও নেই। রক্ষণাবেক্ষণেও গাফিলতি রয়েছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে পড়ুয়াদের পরিচিতিপত্র, স্কুলে ঢোকা-বেরনোর সময়ে নজরদারির জন্য বিশেষ দল ও স্কুলে সিসিটিভি বসানোর কথা বলা হয়েছে। পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্কুলকর্তৃপক্ষকে পড়ুয়াদের নিয়ে কর্মশালা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলবাস ও তার কর্মীদের যাবতীয় তথ্য পুলিশের কাছে জমা করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দরা জানান, পরিকল্পনা যথাযথ, তবে এতে সমস্যা মিটবে না। কারণ, সল্টলেকের বিভিন্ন রাস্তায় পার্কিং এবং ফুটপাথ জুড়ে দোকান রয়েছে। অভিযোগ, এর জন্যেই স্কুলবাসগুলি রাস্তার মাঝে পড়ুয়া ওঠায়-নামায়। জিডি আইল্যান্ডের সামনে স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছিল। এ ছাড়াও বিধাননগর কমিশনারেট ভিআইপি রোড, রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে কিংবা সল্টলেকের একাধিক রাস্তায় চলা বেপরোয়া গাড়িগুলির গতি নিয়ন্ত্রণ না করলে দুর্ঘটনা কমবে না।
এই প্রসঙ্গে এক পুলিশ কর্তা জানান, পার্কিং-এর বিষয়টি পুরসভা দেখে। কিছু জায়গায় পার্কিং নিয়ন্ত্রণে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, সমস্যা মেটাতে মহকুমা প্রশাসন, পুরসভা, পুলিশ প্রশাসন এবং পরিবহণ দফতরকে নিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে ফুটপাথের দোকানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার কথাও ভাবা হবে।